1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আরও দ্রুত হারে ছড়াচ্ছে করোনা

২৪ মার্চ ২০২০

প্রতিদিন আরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন করোনা ভাইরাসে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট আশঙ্কা আরও বাড়াল।

https://p.dw.com/p/3ZwFq
ছবি: BGNES

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিল। বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, করোনা ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করছে। প্রাথমিক ভাবে চীনে যখন এই ভাইরাস ছড়িয়েছিল তখন এক লক্ষ মানুষকে আক্রান্ত করতে ভাইরাসের সময় লেগেছিল ৬৭ দিন। এক লক্ষ থেকে দুই লক্ষে পৌঁছতে সময় লেগেছে ১১ দিন। আর তিন লক্ষে পৌঁছে গিয়েছে মাত্র চার দিনে। শুধু তাই নয়, চীন থেকে ইউরোপে পৌঁছতে যতটা সময় লেগেছিল এই ভাইরাসের, বাকি বিশ্বে ছড়াতে তার চেয়ে অনেক কম সময় লাগছে। বস্তুত, এই মুহূর্তে কার্যত পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে করোনা সংক্রমণের খবর মিলছে। ইউরোপ এবং এশিয়ার মতো বহু আফ্রিকার দেশও লকডাউন এবং কার্ফু ঘোষণা করে দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ জনের। মোট আক্রান্ত ৩ লক্ষ ৬২ হাজার জন। তবে এর মধ্যে প্রায় এক লক্ষ মানুষ চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন।

বহু টালবাহানার পর অবশেষে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্যও। সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। দেশের সমস্ত লোককে বাড়ি থেকে না বেরনোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের একাংশ বলছেন, আরও আগেই এই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কারণ প্রতিদিনই সেখানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুও। যুক্তরাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৩৩৫। মোট আক্রান্ত ছয় হাজারেরও বেশি মানুষ।

এ দিকে ইটালিতে মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। সোমবার ৬০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার জেরে মোট মৃতের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেল। আক্রান্ত প্রায় ৬৪ হাজার মানুষ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইটালিতে মৃত এবং আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ কমতে শুরু করেছে। শনিবার সংখ্যাটি সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। তার পর থেকে ধীরে ধীরে কমছে। যদিও এখনও সেখানে যত মানুষ প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।

উপমহাদেশের পরিস্থিতিও যথেষ্ট আশঙ্কার। ভারত এবং পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তুলনায় কম হলেও বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে আতঙ্ক। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় পতিতাপল্লি। সরকার জানিয়েছে, সেখানকার পতিতাদের খাবার, সামান্য অর্থ সাহায্য দেওয়া হবে। কিন্তু সূত্র জানাচ্ছে, সরকারের কাছে দ্রুত সাহায্য দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন যৌনকর্মীরা। তাঁদের দাবি, জীবনধারণের সমস্ত রসদ ফুরিয়ে গিয়েছে।

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে নিউজিল্যান্ডেও। দেশের প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ৫০ লক্ষ মানুষের স্বার্থে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে লকডাউন শুরু হবে সেখানে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক তুরস্কেও। সেখানেও আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। মোট আক্রান্ত দেড় হাজারেরও বেশি। মৃত্যু হয়েছে ২৯৩ জনের। অন্য দিকে যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট করোনা সংক্রমণ আটকাতে এজলাসে বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানানো হয়েছে, বেশির ভাগ বিচারই এখন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হবে। সওয়াল জবাবের পরে বিচারপতি রায়ও দেবেন ভিডিও কনফারেন্সেই। এ দিকে ফ্রান্স করোনার সংক্রমণ আটকাতে একটি নতুন ডিক্রি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন আইনে দেশের নাগরিকরা বাড়ি থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে শরীর চর্চা করতে পারবেন। জগিং করতে পারবেন। কিন্তু তার চেয়ে দূরে যাওয়া যাবে না।

অ্যামেরিকার অবস্থাও ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। দেশের প্রতিটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। নিউ জার্সি বেশ কিছু জেলবন্দিকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন সেনা জানিয়েছে, নিউ ইয়র্ক এবং সিয়াটেলে দুইটি ফিল্ড হাসপাতাল গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই দু'টি তৈরি হলে দেশের অন্য জায়গাগুলিতেও হাসপাতাল তৈরি হবে বলে জানানো হয়েছে।

এ দিকে, করোনার জেরে এ বার অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানালো ইরান। একই কথা জানিয়েছে সুইজারল্যান্ডও। রবিবার এই দাবি তুলেছিল কানাডা এবং নিউজিল্যান্ড।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)