1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবার ড. ইউনূসের সাজা স্থগিতের আহ্বান বিশ্বব্যক্তিত্বদের

৩০ জানুয়ারি ২০২৪

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ছয়মাসের কারাদণ্ড দেয়াকে ‘বিচারের নামে প্রহসন’ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি খোলা চিঠি দিয়েছেন ২৪২ বিশ্বব্যক্তিত্ব৷

https://p.dw.com/p/4bpo0
নিজ দেশে আইনি জটিলতার মধ্যেও অবশ্য নিজের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ড. ইউনূস৷
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস (ফাইল ছবি)ছবি: Syed Mahamudur Rahman/NurPhoto/picture alliance

চিঠিটি ২৮ জানুয়ারি ‘প্রটেক্ট ইউনূস ডট ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম' ওয়েবসাইটে এবং ২৯ জানুয়ারি মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশ করা হয়েছে৷ বিশ্বব্যক্তিত্বদের এই চিঠি পিআর নিউজওয়্যারেও প্রকাশিত হয়েছে৷

চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন ১২৫ নোবেল বিজয়ীসহ ২৪২ বিশ্বব্যক্তিত্ব৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছেন, ‘‘অধ্যাপক ইউনূসের চলমান হয়রানি ও হুমকির বিষয়ে এর আগের ১০৮ নোবেল পুরস্কার বিজয়ীসহ ১৯০ জনের বেশি বিশ্বনেতার সই করা চিঠির জবাবে গত বছরের আগস্টের শেষদিকে একটি সংবাদ সম্মেলনে আপনি বলেছিলেন, ‘‘এক্সপার্ট পাঠাক, ল ইয়ার পাঠাক৷ যার বিরুদ্ধে মামলা তার দলিল দস্তাবেজ খতিয়ে দেখুক যে সেখানে কোনো অন্যায় আছে কিনা৷ তারা এসে দেখুক৷'' আমরা আপনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করলাম৷ শ্রম আইনের যে মামলার রায় ১ জানুয়ারি দেওয়া হয়েছে শুধু সেটিই নয়, সেইসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের বর্তমান ইনভেস্টিগেশনও পর্যালোচনা করা প্রয়োজন৷''

‘‘আমরা পর্যবেক্ষণের জন্য স্বাধীন আইনি বিশেষজ্ঞদের একটি ছোট দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একজন সিনিয়র আন্তর্জাতিক আইনজীবীর প্রস্তাব করছি৷ আমরা শিগগির পর্যালোচনা শুরু করতে চাই এবং অনুরোধ করবো যে, অধ্যাপক ইউনূস ও তার সহকর্মীদের যেকোনো কারাদণ্ডের সাজা এই পর্যালোচনা পর্যন্ত স্থগিত করা হোক,'' লেখা হয়েছে চিঠিতে৷

চিঠির প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ মঙ্গলবার ঢাকায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ওয়াশিংটন পোস্টে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে অন্যান্য নোবেল বিজয়ীদের যে বক্তব্য ছাপা হয়েছে, সেটা বিজ্ঞাপন, কোনো সংবাদ নয়৷''

বাংলাদেশের ‘বিচার ব্যবস্থা খুব স্বচ্ছ' দাবি করে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থা স্বচ্ছ বিধায় সরকারি দলের অনেকেই বিচারের সম্মুখীন হয়, জেলেও যায়৷ ড. ইউনূসের মামলায় সরকার কোনো পক্ষ নয়, যেসব শ্রমিক-কর্মচারীরা বঞ্চিত হয়েছেন, তারাই তার নামে মামলা করেছেন৷'' 

প্রসঙ্গত, শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ছয়মাসের সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করার পর রোববার ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন যে, তার বিরুদ্ধে এই মামলাটি শ্রমিকরা নন, সরকারের অধীনে থাকা একটি অধিদপ্তর করেছিল৷ 

তিনি বলেন, ‘‘কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর তো সরকারি, সরকারের অধীন৷ শ্রমিক তো কোনো মামলা করেনি, সেটা আপনারা (সাংবাদিক) বলেন৷ এটা তো মিথ্যা কথা৷''

এদিকে, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের প্রায় ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা একটি মামলায় সোমবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটে অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)৷

দুদক সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ–সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠিয়েছিল৷ দুদক দীর্ঘ অনুসন্ধান করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলা করে৷ সেই মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার অনুমোদন পাওয়া গেছে৷''

ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন এই বিষয়ে বলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর দুদকে চিঠি দিয়েছে, যেটা তারা পারে না৷ আর ড. ইউনূস যখন এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন, তখন তড়িঘড়ি করে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে৷ এর মাধ্যমে ড. ইউনূসকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে৷''

এর আগে গত সপ্তাহে ড. ইউনূসকে ‘হয়রানি বন্ধের' আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি পাঠান যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের ১২ জন সদস্য৷

চিঠিতে তারা লিখেছেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে, যার মধ্যে আছে অভিন্ন স্বার্থে ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতা৷ অধ্যাপক ইউনূসকে হয়রানির অবসান এবং অন্যদের সরকারের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে বাক্‌স্বাধীনতা চর্চা করার সুযোগ এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে অব্যাহত রাখতে সাহায্য করবে৷''   

নিজ দেশে আইনি জটিলতার মধ্যেও অবশ্য নিজের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস৷ তিনি ‘তিন শূন্যর' নতুন পৃথিবী গড়তে চান৷ একটি শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ, দ্বিতীয়টি শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা এবং তৃতীয়টি উদ্যোক্তা শক্তি বিকাশের মাধ্যমে শূন্য বেকারত্বের৷

এআই/এসিবি (প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, কালের কণ্ঠ)

রোহিঙ্গাদের জোর করে বের করে দেয়া উচিত হবে না

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য