আফগান চার্লি চ্যাপলিন
২৫ বছরের কারিম আসির বিখ্যাত অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের মতো সেজে আফগান দর্শকদের আনন্দ দিতে চান৷ এ কাজে সফল হয়ে ‘আফগান চার্লি’ হিসেবে পরিচিতিও পেয়েছেন তিনি৷
দুঃখ-হতাশার বিরুদ্ধে লড়াই
আত্মঘাতী হামলা থেকে শুরু করে গাড়ি বোমা হামলা, বিস্ফোরণ, হত্যা, সবকিছুরই প্রত্যক্ষদর্শী আসির৷ ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠির কাছ থেকে নিজেও হুমকি পেয়েছেন একাধিকবার৷ কিন্তু তা তাঁকে দমিয়ে তো রাখতে পারেইনি, বরং জুগিয়েছে উৎসাহ৷ নানা ঘাত-প্রতিঘাতে বিপর্যস্ত আফগানদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন তিনি৷
চার্লি অফ আফগানিস্তান
চার্লি চ্যাপলিনকেই নিজের মডেল হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান আসির৷ স্বভাবতই সাজসজ্জাও চার্লির মতোই৷ সেই ছোট গোঁফ, পায়ের চেয়ে বড় জুতা, ব্যাগি প্যান্ট, হাতে ছড়ি এবং মাথায় হ্যাট৷ দেখে মনে হয় জ্বলজ্যান্ত চার্লি হেঁটে বেড়াচ্ছেন কাবুলের রাস্তায়৷
চার্লিই কেন?
১৯৯৬ সালে তালিবানের হাত থেকে বাঁচতে ইরান চলে যায় আসিরের পরিবার৷ ইরানের টিভিতেই প্রথম চার্লি চ্যাপলিনকে দেখেন আসির৷ তখনই সিদ্ধান্ত নেন, এভাবেই দুঃখের বিষয়বস্তু নিয়েও মজা করে হাসি ফোটাতে হবে মানুষের মুখে৷ তাঁর পরিবার কয়েক বছর পর দেশে ফিরলে সে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হাতে-কলমে শুরু করেন তিনি৷
জঙ্গিদের হুমকি
এমন পারফরম্যান্স ‘অনৈসলামিক’, আখ্যা দিয়ে একাধিকবার হুমকিও দেয়া হয়েছে আসিরকে৷ কিন্তু তারপরও পাবলিক পার্ক, এতিমখানা, প্রাইভেট পার্টি এবং বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার আয়োজনে পারফর্ম করে চলেছেন তিনি৷ আসিরের ভাষায়, ‘‘আমি তাঁদের দুঃখ ভোলার একটা সুযোগ করে দিতে চাই৷’’
জনপ্রিয়তা
কাবুলে সবাই আসিরের পারফরম্যান্সের ভক্ত৷ দেখা হলেই সেলফি নেয়ার জন্য তাঁরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন৷ আসিরও সবসময় হাসিমুখেই তাঁদের স্বাগত জানান৷ কিন্তু তারপরও তাঁর মনে ভয়, এই জনপ্রিয়তাই হয়ত একসময় কাল হয়ে দাঁড়াবে৷ কিন্তু তারপরও, বিস্ফোরণ বা আত্মঘাতী বোমাকে ভয় পান না আসির৷ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি চার্লিই থাকতে চান৷