আফগানিস্তানে বিদেশি চিকিৎসক দলের মৃতদেহ উদ্ধার
৭ আগস্ট ২০১০বিদেশি ত্রাণকর্মীদের হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে আফগানিস্তানের বাদাখশান প্রদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে৷ নিহতদের মধ্যে ছয় জন মার্কিন, একজন ব্রিটিশ এবং একজন জার্মান চিকিৎসক রয়েছেন বলে জানা গেছে৷ এদের মধ্যে পাঁচ জন পুরুষ এবং তিন জন নারী চিকিৎসক বলে জানিয়েছেন প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান আগা নুর কেনতুজ৷ এছাড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের এই দলের সাথে থাকা আরো তিন আফগান দোভাষীর মধ্যে দু'জন খুন হয়েছেন৷ পালিয়ে বেঁচে গেছেন এক আফগান৷ বেঁচে যাওয়া ব্যক্তির নাম সাইফুল্লাহ৷
পুলিশের সূত্র মতে, এসব ত্রাণকর্মী কয়েকদিন আগে খুন হন৷ তবে অত্যন্ত দূরবর্তী পাহাড়ি অঞ্চলে ঘটনা ঘটায় এতোদিনে লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে৷ মূলত, গুলির মুখ থেকে বেঁচে যাওয়া সাইফুল্লাহর খবর অনুযায়ী অভিযান চালিয়েই এসব মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ সাইফুল্লাহর দেওয়া তথ্য মতে, চিকিৎসক দলটি খুন হওয়ার আগে তিন দিন ধরে নুরিস্তান প্রদেশ এবং বাদাখশান প্রদেশের বেশ কিছু গ্রামে গিয়ে স্থানীয়দের চিকিৎসা সেবা দিয়েছে৷ এরপরই তারা ঘন বনের মধ্যে অস্ত্রধারী একটি দলের মুখোমুখি হন৷ সেখানে তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়৷ তবে সাইফুল্লাহ কুরআন শরিফ থেকে কিছু অংশ তেলাওয়াত করেন৷ ফলে অস্ত্রধারীরা তাঁকে মুসলমান বুঝতে পেরে ছেড়ে দেয়৷
এই হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব স্বীকার করেছে তালেবান৷ তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেছে, তাদের একটি টহল দল আটজন বিদেশির একটি দলের মুখোমুখি হয় এবং তাদের সবাইকে খুন করে৷ মুজাহিদের দাবি, তারা সবাই ছিল খ্রিষ্টান মিশনারি৷ তাই তাদের হত্যা করা হয়েছে৷ কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র কেইটলিন হেইডেন বেশ কিছু মার্কিনি খুন হওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন৷ তবে তাৎক্ষণিকভাবে এব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন তিনি৷
এদিকে, ১৯৬৬ সাল থেকে আফগানিস্তানে সেবা কাজে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সহায়তা মিশন - আইএএম-এর দাবি, নিহতরা তাদের চক্ষু বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য৷ সেখানে স্থানীয় মানুষকে স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে সংস্থাটি৷ আইএএম এক বিবৃতিতে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা