আটটি স্মরণীয় চিঠি
কম্পিউটারের যুগে কলম হাতে নিয়ে চিঠি লেখার দিন শেষ হতে চলেছে৷ তবে কিছু চিঠি স্মরণীয় হয়ে থাকবে চিরকাল৷ দেখুন ছবিঘরে...
জার্মানি থেকে এলভিস প্রিসলি
১৯৫৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর হয়ে কাজ করতে জার্মানির ফ্রিডবার্গে এসেছিলে রক-এন রোল তারকা প্রিসলি৷ ভক্ত, বন্ধুদের প্রচুর চিঠি আসছিল সেই ঠিকানায়৷ ব্যস্ততার কারণে চিঠির জবাব দিতে পারছিলেন না৷ সেই হতাশা থেকেই ১৯৫৯ সালে এক চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘‘সব চিঠির উত্তর ব্যক্তিগতভাবে লিখতে পারছি না বলে আমি দুঃখিত৷ তবে আমি সবসময় ফেলে আসা বন্ধু এবং ভক্তদের কথা ভাবি৷’’
‘প্রতারক’ স্বামীকে ফ্রিডা কাহলো
মেক্সিকান শিল্পী ফ্রিডা কাহলোর একটা পা গ্যাংগ্রিনের কারণে কেটে ফেলতে হয়৷ পা কাটার এক বছর পর (১৯৫৩ সালে) মৃত্যু হয় তার৷ অপারেশন থিয়েটারে যাওয়ার আগে স্বামী ডিয়েগো রিভেরাকে চিঠি লিখেছিলেন নিজ হাতে৷শিল্পী স্বামী বহুবার তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন- এই বিশ্বাস থেকে বড় দুঃখ নিয়ে চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘‘তোমাকে মুক্তি দিলাম- এ কথা জানাতেই লিখছি আমি৷ তোমাকেও আজ আমি কেটে ফেললাম!’’
মহাত্মা গান্ধীকে আলবার্ট আইনস্টাইন
মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী তখন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ব্যস্ত৷ তাঁর প্রতি সমর্থন ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এক চিঠিতে বিজ্ঞানী আইনস্টাইন লিখেছিলেন, ‘‘আপনি আপনার কাজের মাধ্যমে দেখিয়েছেন, যারা সহিংসতা পরিহার করে না তাদের বিরুদ্ধেও কোনো রকমের সহিংসতার আশ্রয় না নিয়েও সফল হওয়া যায়৷’’ আইনস্টাইন চিঠিটি লিখেছিলেন ১৯৩১ সালে৷ ১৬ বছর পর অহিংস আন্দোলন করে ঠিকই ব্রিটিশদের ভারত ছাড়তে বাধ্য করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী৷
হিটলারকে গান্ধীর হুমকি
১৯৩৯ সালে হিটলারকে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন গান্ধী৷ ‘প্রিয় বন্ধু’ সম্বোধন করেই চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘‘এটা খুব পরিষ্কার যে, আপনিই একমাত্র ব্যক্তি যে কিনা যুদ্ধ থামিয়ে মানবজাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে৷’’ নিজে যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে পরাক্রমশালী ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে সফল হচ্ছেন তারও উল্লেখ করেছিলেন চিঠিতে৷ বলা বাহুল্য, শান্তির বাণীতে কানই দেননি যুদ্ধবাজ হিটলার৷
ভার্জিনিয়া উল্ফের চিরবিদায়ের চিঠি
১৯৪১ সাল৷ ব্রিটিশ লেখিকা উল্ফ তখন ভয়ঙ্কর ডিপ্রেশনে ভুগছেন৷ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর বাঁচবেন না৷ সেই অবস্থায় একটা চিঠি লিখেছিলেন স্বামী লিওনার্ডকে৷ আবেগঘন সেই চিঠিতে আগে বহুবার এমন সংকটে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে শেষে লিখেছিলেন, ‘‘তবে এবার আর আমি সেরে উঠবো না৷’’ তারপর ওভারকোটের পকেটে পাথর ভরে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে চিরবিদায় নেন ভার্জিনিয়া উল্ফ৷ ছবিতে ভার্জিনিয়া উল্ফের ভূমিকায় নিকোল কিডম্যান৷
দা ভিঞ্চির চাকরির দরখাস্ত
১৪৮০ সালে চাকরি চেয়ে অদ্ভুত এক চিঠি লিখেছিলেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি৷ নিজেকে সামরিক বাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিয়ে লেখা সেই চিঠিতে কাজও হয়েছিল৷ ওই চিঠির সুবাদেই ‘দ্য লাস্ট সাপার’ আঁকার দায়িত্ব পেয়েছিলেন দা ভিঞ্জি৷
বান্ধবীকে গ্যোটে
বান্ধবী চার্লটে ফন স্টাইনকে সব মিলিয়ে অন্তত ১৫০০ চিঠি লিখেছিলেন ইয়োহান ভল্ফগাং গ্যোটে৷ তবে সবচেয়ে আলোচিত ১৭৭৬ সালে লেখা একটা চিঠি৷ সেখানে গ্যোটে লিখেছিলেন, ‘‘তোমার উপস্থিতি আমার হৃদয়ে দোলা জাগানো প্রভাব ফেলেছে৷ অনুভূতিটা যে কেমন বলে বোঝাতে পারবো না!’’
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে রানির চিঠি
সেই চিঠিতে প্যানকেকের রেসিপি পাঠিয়েছিলেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ৷ ব্রিটেন সফরে এসে রানির দরবারে প্যানকেক খেয়ে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডুইট ডি. আইজেনহাওয়ার এত মুগ্ধ হয়েছিলেন যে রানির মনে হয়েছিল রেসিপিটা লিখে পাঠানো দরকার৷