আজব কয়েকটি মামলার কথা
জার্মানিতে কর্মক্ষেত্রে কাজের সময় কেউ দুর্ঘটনার শিকার হলে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে৷ এজন্য আছে ‘সোশ্যাল সিকিউরিটি ট্রাইব্যুনাল’৷ এই আদালতের বিচারকরা প্রায়ই কিছু অদ্ভুত মামলার মুখোমুখি হন৷
ফটোকপি তো আর মানুষকে তৃষ্ণার্ত করে না!
ড্রেসডেনের সোশ্যাল সিকিউরিটি ট্রাইব্যুনালের বিচারকের অন্যতম যুক্তি ছিল এটি৷ এই যুক্তি দিয়ে তিনি এক অফিস কর্মীর ক্ষতিপূরণের দাবি গ্রহণযোগ্য নয় বলে রায় দেন৷ ঐ কর্মী ফটোকপি করার সময় অ্যালকোহলমুক্ত বিয়ার পান করছিলেন৷ সে সময় বিয়ারের ফেনা হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তাড়াতাড়ি তা পান করতে গিয়ে দাঁত ভাঙেন তিনি৷ এরপর ক্ষতিপূরণ চাইলে বিচারক তাঁকে জানান, খাবার আর পানীয় কর্মক্ষেত্রের বিমার আওতায় পড়ে না৷
আনন্দের জন্য আইসক্রিম, কাজের জন্য নয়
বার্লিনের এক ব্যক্তি কাজ শেষে পাতাল ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার সময় আইসক্রিম খাচ্ছিলেন৷ পাতাল ট্রেনে ঢোকার সময় আইসক্রিমে কামড় দিলে হঠাৎ সেটি খাদ্যনালীতে আটকে গিয়ে ব্যথার উপদ্রব হয়৷ পরবর্তীতে জানা যায়, হার্ট অ্যাটাকের কারণে ঐ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল৷ বার্লিনের সোশ্যাল সিকিউরিটি ট্রাইব্যুনাল জানায়, এটি কাজ সম্পর্কিত কোনো দুর্ঘটনা ছিল না৷ কারণ ঐ ব্যক্তি নিজের আনন্দের জন্য আইসক্রিম খাচ্ছিলেন, কাজের জন্য নয়৷
কাজের সময় যৌনমিলন নয়
সরকারি এক নারীকর্মী কাজের প্রয়োজনে এক জায়গায় সফরে গিয়েছিলেন৷ সেখানে গিয়ে যৌনকর্মে লিপ্ত থাকা অবস্থায় ঘরের বাতি ভেঙে গেলে তার টুকরায় আহত হন ঐ কর্মী৷ এ জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করলে আদালত সেটি প্রত্যাখ্যান করেন এই বলে যে, কাজের সময় কর্মীদের যৌনমিলন প্রত্যাশা করেন না কোনো চাকরিদাতা৷
কাজের সময় লাফিয়ে পড়া নয়
২৭ বছরের এক ব্যক্তি পেশা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ গিয়েছিলেন৷ ট্রেনিংয়ের বিরতিতে তাঁর সহকর্মীরা মজা করার জন্য তাঁকে ভিজিয়ে দিতে চেয়েছিলেন৷ এই অবস্থা থেকে বাঁচতে বেচারা ঐ ব্যক্তি জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েন! এজন্য আবার ক্ষতিপূরণও চেয়ে বসেন তিনি৷ তবে আদালত তাঁকে জানিয়ে দেন যে, লাফিয়ে পড়াটা তাঁর কাজ সংশ্লিষ্ট ছিল না৷
ঘুমিয়ে পড়া
পানশালায় কাজ করা এক ব্যক্তি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন৷ ঘুমন্ত অবস্থায় পড়ে গিয়ে আহতও হন তিনি৷ এটাকে কি কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার সংজ্ঞায় ফেলা যায়? আদালত বলছে, না৷ কারণ, অতিরিক্ত কাজের জন্য তাঁর ঘুম পায়নি৷
রাতের বেলায় মদ্যপ হলে চলবে না
ক্ষতিপূরণ চাওয়া এক ব্যক্তি অফিসের প্রয়োজনে ইবিজা সফরে গিয়েছিলেন৷ সেখানকার এক পানশালায় গিয়ে ক্লায়েন্টের সঙ্গে মাঝরাতের বেশি সময় পর্যন্ত পানীয় পান করেছিলেন৷ এরপর মদ্যপ অবস্থায় পানশালা থেকে বের হয়ে আবার ঢুকতে গিয়ে একজনের সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত হয়ে আহত হন৷ এ প্রসঙ্গে সোশ্যাল সিকিউরিটি ট্রাইব্যুনাল বলছে, অফিসের প্রয়োজনে ভ্রমণকারীরা বিমার আওতায় পড়লেও রাতের বেলায় মদ্যপ হওয়াদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়৷