আইসিসির যুদ্ধাপরাধ তদন্ত মিয়ানমারের প্রত্যাখ্যান
১৬ নভেম্বর ২০১৯রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না তা তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)৷ পূর্ণ তদন্ত শুরুর জন্য আইসিসির কৌঁসুলি ফাতু বেনসুদার একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে৷ রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগের তদন্তে এটিই হচ্ছে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক আদালতের উদ্যোগ৷
তবে মিয়ানমার বলছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের এই উদ্যোগ কোনভাবেই আইসঙ্গত নয়৷ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের মুখপাত্র জো টে বলেন, ‘‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্ত আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়৷''
মিয়ানমার এখনও আইসিসি সনদে স্বাক্ষর করেনি, তাই দেশটি এই ট্রাইব্যুনালের সদস্যও নয়৷ কিন্তু আইসিসি বলছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশ সংস্থাটির সদস্য হওয়ায় এই তদন্তের এখতিয়ার তাদের রয়েছে৷ টে এই উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘‘মিয়ানমার তার নিজস্ব কমিটি দিয়েই প্রয়োজনে যেকোন নির্যাতনের তদন্ত এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে৷''
‘‘মিয়ানমার এবং সরকার কোনো কিছু অস্বীকার করেনি কিংবা চোখও বন্ধ করে নেই,'' যোগ করেন তিনি৷
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় বিদ্রোহীদের হামলার অভিযোগে রোহিঙ্গাদের উপর অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী৷ এর ফলে গত দুই বছরে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়৷
রোহিঙ্গারা উপর চালানো নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ তুলে ধরে একে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ৷
মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে মিয়ানমারের বিচার করার এখতিয়ার হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রয়েছে বলে সিদ্ধান্ত আসার পর দেশটির বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছিল৷
গত বুধবার একাধিক রোহিঙ্গা ও অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠন আর্জেন্টিনায় মিয়ানামারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে৷ আং সান সূ চির সাথে এই মামলায় অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন মিয়ানমারের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতারাও৷
এর আগে সোমবার মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের হেগের দি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের পক্ষে মামলা দায়ের করেছে গাম্বিয়া৷ মামলার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে৷
এফএস (এএফপি, রয়টার্স, এপি)