আইসল্যান্ডে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে রক্ষার প্রস্তুতি
৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ১৪০০ ভূমিকম্প হয়েছে গ্রিন্ডাভিক শহরে৷ বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল৷ ফাটল থেকে বেরোতে থাকা ধোঁয়া জাগাচ্ছে মহাবিপর্যয়ের শঙ্কা৷ আইসল্যান্ড তাই বিপর্যয় এড়ানোর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ধ্বংসের অপেক্ষায়?
জেলেদের শহর হিসেবে পরিচিত গ্রিন্ডাভিকের অনেক জায়গায় দেখা দিয়েছে এমন ফাটল, সেখান থেকে এভাবেই বের হচ্ছে ধোঁয়া৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ আসলে মাটির দূর গভীরে চলমান অগ্ন্যুৎপাতের সামান্য আলামত৷ অগ্ন্যুৎপাত ওপরে চলে এলে গ্রিন্ডাভিক-এর কী অবস্থা হবে?
শহর জুড়ে সিসমোগ্রাফ
এরই মাঝে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় ১৪০০-রও বেশি ভূমিকম্প সামলেছে গ্রিন্ডাভিক৷ ভূতাত্ত্বিকরা বলছেন, কয়েকদিনের মধ্যে ভয়ঙ্কর এক অগ্ন্যুৎপাত শুরুর আশঙ্কা রয়েছে৷ শহরের বিভিন্ন স্থানে এমন অনেক সিসমোগ্রাফ তারাই স্থাপন করেছেন৷
জিওথার্মাল স্পা বন্ধ
আইসল্যান্ডের ব্লু লেগুন জিওথার্মাল স্পা পর্যটকদের খুব প্রিয়৷ কিন্তু অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কায় সেই স্পা এখন বন্ধ৷
নিজের ঘরে মাত্র পাঁচ মিনিট!
আইসল্যান্ডে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত নতুন কিছু নয়৷ প্রকৃতির এই রুদ্ররূপ অনেকবারই দেখেছে দেশটি৷ জুলাই মাসেও লিটলি-হ্রুটুর পাহাড়ে দেখা দিয়েছিল অগ্ন্যুৎপাত৷ বড় বিপর্যয়ের শঙ্কায় গ্রিন্ডাভিক এবারও খালি করে দেয়া হয়েছিল৷ তবে সোমবার মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য সবাইকে শহরে ফেরার সুযোগ দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷ সেই সুযোগে নিজের ঘর থেকে অতি প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে নিচ্ছেন একজন৷
প্রিয় শহর ছাড়ার হিড়িক
১৯৭৩ সালে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল আইসল্যান্ডে৷ এবারের প্রাকৃতিক ‘প্রলয়’ তার চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে৷ তাই গ্রিন্ডাভিক ছাড়ছেন৷ এই মুহূর্তে প্রিয় শহর থেকে যত দূরে যাওয়া যায় ততই নিরাপদ৷
ম্যাগমার আতঙ্ক
সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা বলছেন, যে-কোনো মুহূর্তে ম্যাগমা করিডোর আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশ থেকে উঠে আসতে পারে, তাতে যে বিস্ফোরণ হবে তার প্রভাব ইউরোপের মূল ভূখণ্ডেও পড়তে পারে৷ মাটির ১০০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার নীচে ১২০০ থেকে ১৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকে বলে সেখানে শিলা তরল অবস্থায় থাকে। সেই তরল শিলাকেই বলা হয় ম্যাগমা। আইসল্যান্ড জুড়ে এখন ম্যাগমা নিয়ে আতঙ্ক৷
ভূমিকম্প কমলেও আতঙ্ক কমছে না
এখন আর ৪৮ ঘণ্টায় ১৪০০-র মতো ঘনঘন ভূমিকম্প হচ্ছে না৷ তারপরও গ্রিন্ডাভিকে কমেনি আতঙ্ক৷ রবিবারের পর থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিচ্ছে এমন বড় বড় ফাটল৷ ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, ভূত্বক থেকে আর হয়ত খুব বেশি দূরে নেই ম্যাগমা৷
টম্ট
গ্রিন্ডাভিক প্রায় জনমানবহীন৷ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছেড়েছেন সবাই৷ যাবার আগে দরজায় লিখে গেছেন ‘টম্ট’, যার অর্থ খালি বা ফাঁকা৷