দুই সন্তান নীতি চায় আরএসএস
১৭ জানুয়ারি ২০২০রামমন্দির তৈরি কেবল সময়ের অপেক্ষা, ৩৭০ ধারা বিলোপ হয়ে গিয়েছে, তিন তালাকও আইনত নিষিদ্ধ, এই অবস্থায় আরএসএসের কর্মসূচির এক নম্বরে এখন দুই সন্তানের নীতি চালু করা৷ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদে স্বয়ংসেবকদের বলেছেন, আরএসএস চায় আইন করে দুই সন্তানের নীতি চালু হোক৷ তবে আইন সরকার করবে৷ আরএসএস কেবল তাঁদের মনোভাবের কথা জানাল৷
ভাগবত জানিয়েছেন, রামমন্দির নিয়ে সরকারি ট্রাস্ট হয়ে গেলেই তাঁরা মন্দিরের বিষয় থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবেন৷ কাশী ও মথুরা কখনওই তাঁদের কর্মসূচিতে ছিল না৷ এ বার তাঁদের কর্মসূচিতে আছে, দুই সন্তানের নীতি চালু করা৷ ২০১৫ সালেও বিজয়া দশমীর ভাষণে সরসঙ্ঘচালক জনসংখ্য়া নীতি চালু করতে বলেছিলেন৷
কিন্তু এর আগে সঙ্ঘ পরিবারের প্রধান তিনটি কর্মসূচি ছিল, রামমন্দির, ৩৭০ ধারা বিলোপ এবং অভিন্ন দেওয়ানী বিধি। প্রথম দুটো হয়েছে৷ কিন্তু অভিন্ন দেওয়ানী বিধি হয়নি৷ তা হলে কি সঙ্ঘ পরিবার এই বিষয়টি ছেড়ে দিল৷ আরএসএসের মিডিয়া সেল বিশ্ব সংবাদ কেন্দ্রর দায়িত্বে থাকা অরুণ আনন্দ ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আমরা অভিন্ন দেওয়ানী বিধির দাবি থেকে সরে আসছি না৷ তবে তিন তালাক বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ তাই অভিন্ন দেওয়ানী বিধি পরে করলেও হবে৷ কিন্তু সঙ্ঘের বরাবরের মত হল, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি৷ তাই তিনি এখন দুই সন্তানের নীতি নেওয়ার কথা বলেছেন৷''
বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের মধ্য়ে একটা ধারণা আছে, ভারতে প্রধাণত মুসলিমরাই জন্মনিয়ন্ত্রণ করে না৷ তারা বহু সন্তানের নীতিতে বিশ্বাস করে৷ মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য এম কিউ আর ইলিয়াস ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, দেশের সমস্যা থেকে নজর অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য এই সব বিষয় আনা হচ্ছে৷ কার কটা বাচ্চা হবে, সেটা তো সেই ব্যক্তির ওপরে নির্ভর করছে৷ এ নিয়ে আইন তো অসাংবিধানিক হবে৷ অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিশ মুশাওরত এর সভাপতি নাবেদ হামিদের মত হল, বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার সমানে ঘৃণার রাজনীতি করছে৷ কারণ, পরপর দুটি জনগণনায় দেখা যাচ্ছে, মুসলিমদের জনসংখ্য়া বৃদ্ধির হার কমছে৷
কিন্তু বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, এই নীতি চালু হলে তো সকলের ওপরেই হবে৷ তা হলে এই ধরনের কথার তো কোনও অর্থই নেই৷ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নীতি নিয়ে চলছে৷ ভারত কেন পিছিয়ে থাকবে?