অর্থনৈতিক সংকটে শ্রীলঙ্কা, ক্ষুব্ধ জনতা
ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা৷ জ্বালানি, বিদ্যুতের ঘাটতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ রূপ নিয়েছে সরকারবিরোধী আন্দোলনে৷ জনতার ক্ষোভে জ্বলছে রাজধানী কলম্বো৷
জ্বলছে কলম্বো
বাজারে চড়া দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি সংকট, ১৩ ঘণ্টার লোডশেডিং; শ্রীলঙ্কার মানুষ নিত্যদিন এখন এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি৷ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ৷ গত মাস থেকেই শুরু করেছেন বিক্ষোভ৷ ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে রাজধানী কলম্বো৷
উচ্চমূল্য
দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেট্রোল, ডিজেলের মূল্য ২৫ শতাংশ বেড়েছে দেশটিতে৷ বাজারে দেখা দিয়েছে খাদ্যপণ্যের অভাব, নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দাম৷ মার্চে মূল্যস্ফীতি ১৯ শতাংশে ঠেকেছে৷
কারফিউ
বিরোধী দলের ডাকে সরকারবিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে কারফিউ জারি করেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে৷ রাস্তায় নামে সেনা সদস্যরা৷ রাজাপাকসের বাসভবনের সামনে সশস্ত্র প্রহরায় সেনা সদস্যদের দেখা যায়৷
সরকারবিরোধী আন্দোলন
সরকারবিরোধী আন্দোলনের জেরে এরইমধ্যে পদত্যাগ করেছেন ২৬ জন মন্ত্রী৷ তবে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্র রাজাপাকসে ইস্তফা দেননি৷ জরুরি অবস্থার মধ্যেও বিক্ষোভ করে যাচ্ছেন প্রতিবাদকারীরা৷ রোববার প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভের ছবি এটি৷
তলানিতে রিজার্ভ
কমতে কমতে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৩০ কোটি ডলারে ঠেকেছে৷ ঋণ পরিশোধ, আমদানি ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি৷ যার কারণে দেখা দিয়েছে জ্বালানি সংকট৷ ভেঙে পড়েছে পরিবহণ ব্যবস্থা৷ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায় দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ ঘাটতি৷ ক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় পুড়িয়ে দিয়েছেন যানবাহন৷
প্রেসিডেন্টের উপর ক্ষোভ
এই পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের দিকে অভিযোগের তীর বিরোধী দল ও আন্দোলনকারীদের৷ রাজাপাকসে ও তার স্বজনদের অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা৷ ‘গোটা গো হোম’ বা ‘গোটা বাড়ি ফিরে যাও’ এমন স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ৷
সহিংসতা
বিক্ষোভ দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার৷ রাজপথ ছাড়ছে না জনতাও৷ আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে আহত হচ্ছে দুই পক্ষই৷ ছবিতে আহত এক পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন সহকর্মীরা৷
আন্দোলনে পোষাপ্রাণী
এক ব্যক্তি তার পোষা কুকুরকেও নিয়ে এসেছেন আন্দোলনে৷ গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে ‘বাহা মেন’ ব্যান্ডের গানের শিরোনাম ‘হু লেট দ্য ডগস আউট’ লেখা প্ল্যাকার্ড৷
সরকার কী করছে
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ঋণের উৎস খুঁজছে শ্রীলঙ্কার সরকার৷ জরুরি পণ্য আমদানির জন্য গত মাসে ভারতের সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের চুক্তি করেছে দেশটি৷ আরো ১০০ কোটি ডলারের জন্য প্রতিবেশী দেশটিকে অনুরোধ করেছে তারা৷ ২৫০ কোটি ডলার ঋণ পেতে আলাপ চলছে চীনের সঙ্গে৷ তবে পরিস্থিতি সামলাতে এই টাকাও যথেষ্ট নয়৷ তাই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের কাছে উদ্ধার তহবিলের জন্য হাত পেতেছে এখন সরকার৷