অন্ধকার দূর করতে চাই আলো – জাতিসংঘ
২২ সেপ্টেম্বর ২০১০তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন শুরু হয় গত সোমবার৷ এতে আলোচনায় শীর্ষে রয়েছে দারিদ্র্য দূরীকরণ৷ রান্না থেকে শুরু করে রাতের বেলা বাড়িতেও আলোর মুখ দেখছে না পৃথিবীর অসংখ্য মানুষ৷ কথাগুলো জানিয়েছে জাতিসংঘের জ্বালানি দপ্তর৷ আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা বা ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির একটি প্রতিবেদন বলেছে, বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের ব্যবহার থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত৷ আর আরও প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ রান্নার কাজ করে কাঠখড় পুড়িয়ে৷ নিউ ইয়র্কে বিশ্বের দারিদ্র্য নিয়ে সম্মেলনে বেশ জোর দিয়েই বলা হয় – এসব ঘটনা আমাদের জন্য লজ্জাজনক, আর তা মেনে নেওয়াও কষ্টকর৷
আলোকিত উন্নত দেশ
শুধু একটি সুইচ টিপলেই পুরো বাড়িতে জ্বলে উঠবে আলো – এ ঘটনা ঘটছে শুধুমাত্র পশ্চিমের দেশগুলোতে৷ উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, নিউ ইয়র্কের মানুষরা যত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, গোটা উত্তর আফ্রিকার মানুষ তত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে না৷ নিউ ইয়র্কে ঝলমলে আলোর নিচে বসবাস করছে প্রায় বিশ কোটি মানুষ আর আফ্রিকার উত্তরে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ রয়েছে বিদ্যুৎবিহীন৷
সবার কাছে, ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে দেওয়াই জাতিসংঘের অন্যতম লক্ষ্য৷ কারণ, বলা হচ্ছে বিদ্যুতের ব্যবহার থেকে দূরে থাকা বা ব্যবহার করার সুযোগ না পাওয়াও সামাজিক সমস্যা৷ এবং তা অর্থনৈতিক সংগতি না থাকাকেই স্পষ্ট করে তোলে৷ দ্রুত এ সমস্যার সমধান করা উচিৎ বলে জাতিসংঘ জানায়৷
জানানো হয়েছে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ১২০ কোটি মানুষ বিদ্যুতের ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হবে৷ এর মধ্যে উত্তর আফ্রিকা এবং এশিয়ার নামই বার বার উঠে এসেছে৷
দারিদ্র্য বিমোচনে জাতিসংঘ
জাতিসংঘের দপ্তর ইউনিডোর উপ পরিচালক ইয়োশিতেরো উরামোতো বলেছেন, জ্বালানির ব্যবহার ছাড়া একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ তিনি আরো বলেন, কেনিয়ার একটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পর গ্রামের চেহারা রাতারাতি পাল্টে গিয়েছে৷ হঠাৎ করেই মানুষের মধ্যে প্রাণ জেগে উঠেছে৷ শুরু হয়েছে পাম্প করে পানি তোলা, মুরগির খামারে বিদ্যুতের সাহয্যে ডিম ফোটানো আর সন্ধ্যার পর বাড়িতে বাড়িতে আলোর ঝলকানি৷ উরামোতো বলেন, বৈদ্যুতিক আলো কেবল রাতের আঁধারই দূর করেনি, বাড়িয়েছে নিরাপত্তা এবং অন্ধকারে চলাফেরার সুযোগ৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার