অধিকারের দাবিতে কাবুলের রাস্তায় নারীরা
৯ সেপ্টেম্বর ২০২১মঙ্গলবার তাদের উপর চরম অত্যাচার চালিয়েছে তালেবান। কাবুলের রাস্তায় তাদের প্রতিবাদ বন্ধ করতে গুলিও চালানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাড়িতে বসে থাকেননি কাবুলের নারীরা। বুধবার ফের তারা রাস্তায় নামেন। হাতে পোস্টার। যাতে লেখা, প্রাণ চলে গেলে চলে যাক, কিন্তু অধিকার আদায় করেই ছাড়ব। এদিনও নারী বিক্ষোভকারীদের উপর অত্যাচার চালায় তালেবান যোদ্ধারা।
মঙ্গলবারই অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি করেছে তালেবান। সেখানে একজনও নারী সদস্য নেই। এতদিন আফগান সরকারে যে নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছিল, তাও তুলে দেওয়া হয়েছে। কাবুলের রাস্তায় যে নারীরা আন্দোলনে নেমেছেন, তাদের দাবি, সরকার এবং প্রশাসনে নারীদের জায়গা দিতে হবে। নারীদের কাজের অধিকার দিতে হবে। তারা আর বাড়িতে বসে থাকবেন না।
আন্দোলন ও অত্যাচার
বুধবারের আন্দোলন থামাতে প্রায় নয়-দশ গাড়ি তালেবান চলে আসে বলে জানিয়েছেন ওই নারীরা। তাদের বেত দিয়ে মারা হয়। ব্যাটারি লাগানো ব্যাটন দিয়ে মারা হয়। যে লাঠি দিয়ে মারলে ইলেকট্রিক শক লাগে। সঙ্গে অকথ্য গালাগাল করা হয় বলেও দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের বাড়িতে যেতে বলা হয়েছে, কারণ, সেটাই তাদের জায়গা।
এতকিছুর পরেও আন্দোলনকারীরা পথ ছাড়েননি। আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। আগামী দিনেও তারা আন্দোলন জারি রাখবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
তালেবানের অবস্থান
১৫ অগাস্ট কাবুল দখল করার পর প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করেছিল তালেবান। সেখানে তারা আগের চেয়ে নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। নারী অধিকার রক্ষিত হবে বলেও জানানো হয়েছিল। আফগান নারীদের ঘরে বসে থাকতে হবে না, তারা শিক্ষার সুযোগ পাবে, কাজের সুযোগ পাবে, এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। যদিও বলা হয়েছিল, এই সবকিছুই হবে শরিয়তের নিয়ম মেনে।
বাস্তবে এখনো পর্যন্ত নারী অধিকার নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তালেবান। মন্ত্রিসভায় নারী নেই। নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও তুলে দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র স্বাস্থ্যের কাজের সঙ্গে যুক্ত নারীদের বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদের ঘরে থাকার বিধান দেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, নিরাপত্তা যতক্ষণ না সুনিশ্চিত হচ্ছে, ততক্ষণ নারীদের ঘরেই থাকতে হবে।
প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ
প্রতিবাদীদের অভিযোগ, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেও একই কথা বলেছিল তালেবান। নিরাপত্তার বিষয়টি দেখিয়ে তারা নারী অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। তাই এবার তারা সেই ফাঁদে পা দেবেন না। তাতে যদি প্রাণ যায়, তাতেও তাদের আপত্তি নেই।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, বিবিসি)