অক্সানার নতুন টার্গেট
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪অক্সানার বয়স আজ ৩৯, কাজেই মহিলা জিমন্যাস্ট হিসেবে তিনি অবসর নেওয়ার কথা ভাবলে কেউই কিছু মনে করত না৷ কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে রুপা জেতার পর অক্সানা নিজেই বলেছেন: ‘‘আমি রিও ডি জানেরোতে আমার সপ্তম অলিম্পিকে যেতে পারব, বলে আশা করছি৷ সাত আমার প্রিয় সংখ্যা কিনা!''
এবারকার এশিয়াডে অক্সানাকে হারিয়ে যিনি সোনা জিতলেন, তিনি তাঁর পুরাতন বৈরি, উত্তর কোরিয়ার হং উন জং৷ মজার কথা, ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে ঐ ভল্ট ডিসিপ্লিনেই অক্সানাকে রুপা নিতে বাধ্য করেন হং৷ বেইজিং-এ অক্সানা নেমেছিলেন জার্মানির হয়ে, তাঁর ছেলের চিকিৎসার দরুণ স্বদেশ উজবেকিস্তান ছেড়ে জার্মানিতে বাসা বাঁধতে হয়েছিল তাঁকে৷ ছেলের হয়েছিল লিউকেমিয়া, রক্তের ক্যানসার৷
২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকেও অক্সানা অংশ নেন জার্মানির হয়ে৷ সেটা ছিল তাঁর ষষ্ঠ অলিম্পিক, যা কিনা মহিলা জিমন্যাস্টদের মধ্যে একটি রেকর্ড৷ নয়ত বিভিন্ন দেশের হয়ে অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়াটা অক্সানার কাছে জলভাত: ১৯৯১ সালের আগে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে কমপিটিশনে নামতেন; ১৯৯২ সালের অলিম্পিকে ছিলেন তথাকথিত ‘‘সম্মিলিত দলে''; ১৯৯৬, ২০০০, ২০০৪-এর অলিম্পিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন উজবেকিস্তানের হয়ে; ২০০৮ ও ২০১২ সালে তিনি ছিলেন জার্মানির অ্যাথলিট৷
অক্সানার পদকের সংগ্রহও উপেক্ষা করার মতো নয়৷ ১৯৯২ সালে ‘‘সম্মিলিত দলের'' হয়ে সোনা জেতা ছাড়াও, তিনি আরো সাতটি বড় চ্যাম্পিয়নশিপে বিভিন্ন ইভেন্টে সোনা জিতেছেন, যদিও সাম্প্রতিককালে তার সব ক'টিই ভল্টে, আগে যাকে ভল্টিং হর্স বলা হতো৷ ইনচন-এর রৌপ্যপদকটি ধরলে তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহে আজ ২৫টি পদক – তিন দশকব্যাপী ক্যারিয়ারে৷
অন্যান্য টপ অ্যাথলিটদের মতো অক্সানা চুসোভিতিনা-ও মাঝেমধ্যে বলতে শোনা গেছে যে, এটাই তাঁর শেষ প্রতিযোগিতা, এবার তিনি ক্লান্ত, কিংবা এবার তিনি কোচিং করা শুরু করবেন –কিন্তু শেষমেষ দেখা গেছে, এই অদম্য ক্রীড়াবিদ তাঁর ‘‘বয়স'' সত্ত্বেও এতই শক্তিশালী যে, তাঁর চেয়ে এক প্রজন্ম ছোট অ্যাথলিটদের সঙ্গে পাল্লা দিতেও তাঁর কোনো অসুবিধে হয় না৷ অক্সানার ভাষায়: ‘‘বয়সটা শুধু একটা সংখ্যা৷ আমি ও' নিয়ে ভাবি না৷ ওরা (অক্সানার চেয়ে কম বয়সের জিমন্যাস্টরা) যখন আমায় দেখে, তখন ওদেরই ভয় পাওয়ার কথা৷''
এসি/ডিজি (ডিপিএ)