1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসা এবং জঙ্গিবাদ

১৫ এপ্রিল ২০০৯

বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসার সঠিক সংখ্যা সরকারের জানা নেই৷ তবে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে যে হিসাব আছে তাতে দেখা যাচ্ছে মাদ্রাসা আছে তিন হাজার ২৫৮টি৷ তবে বেসরকারী হিসাব অনুসারে এই সংখ্যা হবে অন্তত ১৫ হাজার৷

https://p.dw.com/p/HW6C
বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলি কি সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটি ?ছবি: DW

সম্প্রতি বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত অনেকেই নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে স্বীকার করেছে যে তারা তাদের ঘাঁটি হিসাবে কওমি মাদ্রাসাকেই বেছে নিচ্ছে৷ কারণটা স্পষ্ট, প্রত্যন্ত সব এলাকায় গড়ে ওঠা এই সব মাদ্রাসার উপর সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই৷ নেই নিরাপত্তা বাহিনীর দৃষ্টি৷ অবশ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সাধারণ ধমর্ভিরু মানুষদের ধর্মের দোহাই দিয়েই এই সব অপকর্ম চালানো হচ্ছে৷ সম্প্রতি বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব জানিয়েছেন, কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানা সহ এসব ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসার জন্য শিগগির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ এজন্য কওমি মাদ্রাসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ডেকে বৈঠক করা হবে বলে তিনি জানান৷

কওমি মাদ্রাসাসহ সব ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ নির্ধারিত ছকে কওমি, নূরানি, ফোরকানিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসাসহ মসজিদভিত্তিক সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম, শিক্ষার ধরন, প্রতিষ্ঠান চালানোর অর্থের উৎস, কী ধরনের পরিবার থেকে শিক্ষার্থীরা আসছে, শিক্ষাজীবন শেষে কিভাবে তারা কর্মজীবনে প্রবেশ করে প্রভৃতি বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে৷

জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জড়িত হওয়া প্রসঙ্গে মাদ্রাসা বোর্ডের এক কর্মকর্তার মত হল কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে ১ শতাংশের কম জড়িত৷ তাঁর দাবি, বেশি সম্পৃক্ত হয়েছে আহলে হাদিসের মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্ররা৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, কওমি মাদ্রাসা সরকারিভাবে স্বীকৃত কোন শিক্ষা ব্যবস্থা নয়৷ সরকারের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া সম্পূর্ণ বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে এগুলো৷এ কারণে এসব মাদ্রাসার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কোন তথ্য নেই৷ জানা গেছে, দেশে কওমি, নূরানি, ফোরকানিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসাসহ মসজিদভিত্তিক বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক লাখের ওপরে৷এর মধ্যে কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজারের মধ্যে৷ কওমি মাদ্রাসার কোন নির্দিষ্ট সিলেবাস নাই এবং সরকার কর্তৃক স্বীকৃত নয়৷এর ডিগ্রিগুলোও আলাদা, আলিয়া মাদ্রাসার মত নয় ৷ এই ঘরানার মাদ্রাসাগুলো নিয়েই বিতর্ক বেশি কারণ এগুলোর মধ্যে কিছু সংখ্যক মাদ্রাসাকে জঙ্গিবাদের ট্রেনিং গ্রাউন্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয়৷

সব মিলিয়ে শিক্ষা এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের অভিমত, একক শিক্ষা ব্যবস্থা না থাকা এবং কওমি মাদ্রাসার উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণেই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের মাদ্রাসাগুলোকে জঙ্গি প্রশিক্ষণের ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷

প্রতিবেদক: সাগর সরওয়ার, সম্পাদনা: দেবারতি গুহ