1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার কূটনীতিক বহিষ্কারের ‘লড়াই’

৩০ ডিসেম্বর ২০১৬

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ ‘হ্যাকিং’-এর অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন৷ মস্কোও ইটের বদলে পাটকেলে তার প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2V3ap
Moskau US Botschaft Gebäude
মস্কোর মার্কিন দূতাবাসছবি: Getty Images/AFP/K. Kudryavtsev

বৃহস্পতিবার ওবামা ঘোষণা করেন যে, মেরিল্যান্ড আর নিউ ইয়র্কে দু'টি রুশ অফিস ও প্রাঙ্গণ বন্ধ করে দেওয়া হবে৷ শুক্রবার দ্বিপ্রহর থেকে কোনো রুশ কূটনীতিক সেখানে যেতে পারবেন না৷ রুশ কর্মকর্তারা গুপ্তচরবৃত্তি সংক্রান্ত কার্যকলাপের জন্য এই দু'টি কমপাউন্ড ব্যবহার করতেন৷

পরে স্টেট ডিপার্টমেন্ট আরো জানায়, রুশ গুপ্তচর বিভাগের ৩৫ জন কর্মকর্তাকে ‘পার্সোনা নন গ্রাটা' বা কূটনৈতিক পরিভাষায় ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি' বলে ঘোষণা করে হচ্ছে, অর্থাৎ তাদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিত্যাগ করতে হবে৷

মস্কোর জবাব

ওবামার ঘোষণার পরদিনই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানান, অন্তত ৩৫ জন মার্কিন কূটনীতিককে রাশিয়া থেকে বহিষ্কার করা হবে; তাদের মধ্যে ৩১ জন মস্কোয় নিযুক্ত, বাকি চারজন কাজ করেন সেন্ট পিটার্সবার্গের মার্কিন কনস্যুলেটে৷

মার্কিন কূটনীতিকদের মস্কোর একটি ‘ডাচা' বা গাঁয়ের বাড়ি, ও একটি মালগুদামে প্রবেশ করাও নিষিদ্ধ করা হবে বলে লাভরভ জানান৷ তবে লাভরভ স্পষ্ট করে দেন যে, ‘‘কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আইন হলো পারস্পরিকতা'' এবং তার ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে৷

প্রথমে ওয়াশিংটনের অভিযোগ

ওয়াশিংটনের অভিযোগ হল এই যে, রুশ সামরিক কর্তৃপক্ষের গুপ্তচরবৃত্তি সংক্রান্ত কার্যকলাপের মুখ্য পরিচালকমণ্ডলী ‘জিআরইউ' রুশ ফেডারাল নিরাপত্তা সেবা ‘এফএসবি'-র সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রে তথ্য হ্যাক করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে৷ এমনকি রাশিয়া থেকে ‘অভিসন্ধিমূলক সাইবার আক্রমণ' সম্পর্কে একটি বিশদ প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও এফবিআই৷

কাজেই এফএসবি'র বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই সঙ্গে জিআরইউ-এর চার জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ সংস্থাটির প্রধান ইগর ভ্যালেন্টিনোভিচ কোরোবভ স্বয়ং তাদের মধ্যে আছেন৷

মস্কোর অস্বীকার

মস্কো হ্যাকিং ও সাইবার হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ও এইসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন' বলে অভিহিত করেছে৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্রেমলিনের এক মুখপাত্র মন্তব্য করেন যে, মার্কিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ‘রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ধ্বংস করবে'৷

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ বলেছেন, এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ওবামার ‘খামখেয়ালি' ও ‘আগ্রাসী বিদেশনীতির' পরিচায়ক৷ ‘‘যে মার্কিন প্রশাসনের আর দু'সপ্তাহ সময় বাকি আছে, তাদের তরফ থেকে এ ধরনের পদক্ষেপের দু'টি লক্ষ্য আছে: রুশ-মার্কিন সম্পর্কের হানি ঘটানো - যা এমনিতেই এখন নিম্ন পর্যায়ে - এবং স্পষ্টতই প্রেসিডেন্ট-ইলেক্টের আগামী প্রশাসনের বিদেশনীতিমূলক পরিকল্পনায় আঘাত হানা,'' বলেছেন পেস্কভ৷

রুশ সংসদের উচ্চকক্ষের মুখপাত্র কনস্টান্টিন কসাচেভ রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাকে ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক লাশের মরণ খিঁচুনি' বলে বর্ণনা করেছেন৷

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া

ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০শে জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছেন৷ তারপর তিনি ওবামার আরোপিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ফিরিয়ে নিতে পারেন - বিশেষ করে যখন ট্রাম্প একাধিকবার আভাস দিয়েছেন যে, তিনি মস্কোর প্রতি কিছুটা নরম মনোভাব প্রদর্শন করতে চান৷

রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার খবর পেয়ে ট্রাম্প বলেছেন যে, এটা ‘‘আমাদের দেশের পক্ষে আরো বড় ও ভালো ব্যাপারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময়''৷ অপরদিকে তিনি আগামী সপ্তাহে গুপ্তচর বিভাগগুলির প্রধানদের সঙ্গে ‘‘পরিস্থিতির বাস্তব খুঁটিনাটি সম্পর্কে অবহিত হবার জন্য'' মিলিত হচ্ছেন৷

নেতৃস্থানীয় রিপাবলিকানদের প্রতিক্রিয়া

হাউস অফ রিপ্রেজেন্টিভস-এর স্পিকার পল রায়ান রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হানি ঘটানোর প্রচেষ্টার অভিযোগ করে বলেছেন, এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অনেক আগেই আরোপ করা উচিৎ ছিল৷

রিপাবলিকান সেনেটর জন ম্যাককেইন এবং লিন্ডসে গ্র্যাহামও ‘‘রাশিয়ার উপর আরো জোরদার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ'' সমর্থন করবেন বলে জানিয়েছেন৷

এসি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, এপি, ডিপিএ)