1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রসাধন শিল্পী লিজা এলড্রিজ

৬ অক্টোবর ২০১৬

লিজা এলড্রিজ একজন মেক-আপ আর্টিস্ট৷ বাস লন্ডনে কিন্তু তাঁর ফ্যান সারা পৃথিবী জুড়ে৷ ছোটবেলার নেশা পরে তাঁর পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে: মেক-আপ বা প্রসাধন৷ মেক-আপের জগতে একটা আইকন তিনি৷

https://p.dw.com/p/2QtYk
প্রসাধন শিল্পী লিজা এলড্রিজ
ছবি: DW

লিজা এলড্রিজ একজন তারকা বৈকি, মেক-আপ জগতের তারকা৷ বিশ বছর ধরে মেক-আপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন৷ বড় বড় কসমেটিক কোম্পানিকে তাদের নতুন পণ্য ডেভেলপ করতে সাহায্য করে থাকেন৷ বর্তমানে তিনি ‘‘লঁকোম''-এর ক্রিয়েটিভ ডাইরেক্টর৷ বিজ্ঞাপনী প্রচার অভিযান, ফ্যাশন শো বা ম্যাগাজিন ছাড়াও তিনি আসল তারকাদের মেক-আপ দিয়ে থাকেন, যেমন ভিক্টোরিয়া বেকহ্যাম, কেট উইন্সলেট এবং এমা ওয়াটসন৷

তাঁর ক্রিয়েটিভ কাজের কেন্দ্র হলো লন্ডনে তাঁর স্টুডিও, যার নাম হলো ‘হাউস অফ এলড্রিজ'৷ ৪১-বছর-বয়সি লিজা এলড্রিজের শৈশবের স্বপ্ন যেন এখানে বাস্তব হয়ে উঠেছে৷ লিজা বলেন, ‘‘আমার যখন ১৩ বছর বয়স তখন আমাকে থিয়েটারের মেক-আপ সম্পর্কে একটা বই দেওয়া হয়, ষাটের দশকের বই৷ বইটিতে ব্রডওয়ের এক বিখ্যাত অভিনেতা নাটকের বিভিন্ন চরিত্রের মেক-আপ নিয়েছিলেন, যেমন শেক্সপীয়ারের নাটকের মেক-আপ৷ আমি প্রথমবার বইটা দেখেই মুগ্ধ হয়ে যাই৷ ভাবি, এটা তো পেশাও করা যেতে পারে৷ আশ্চর্য সুন্দর রূপান্তর! কাজেই আমি মেক-আপের জিনিসপত্র কিনে স্কুলের নাটক ইত্যাদিতে মেক-আপ দিতে শুরু করি৷ মনে আছে টিচারদের বলেছিলাম, আমার আর অঙ্ক শেখার দরকার নেই কেননা আমি মেক-আপ আর্টিস্ট হব৷ আমার অঙ্ক দিয়ে কী হবে? শুনে টিচাররা মাথা নাড়লেন: তা তো বটেই!''

এক তারকা মেক-আপ আর্টিস্টের কথা

দুই সন্তানের জননী লিজার ইউটিউবে একটি নিজস্ব চ্যানেল আছে, সেখানে তিনি মেক-আপ শেখান টিউটোরিয়াল করে৷ ইউটিউবে লিজার বিপুল জনপ্রিয়তার কারণ হল, তিনি নিজেকে মেক-আপ ছাড়া দেখাতে ভয় পান না৷ কথা বলেন সহজ-সরল ভাবে৷ কাজেই তাঁর বিশ্বজোড়া ফ্যান, প্রসাধন শিল্পের বাইরেও মানুষ তাঁর নাম জানে৷ লিজা স্মৃতিচারণ করলেন, ‘‘ইউটিউবে মেক-আপ টিউটোরিয়াল এতো জনপ্রিয় কেননা এর আগে শুধু ম্যাগাজিনে মেক-আপ লাগানো সম্পর্কে পড়া যেতো৷ খুবই দ্বিমাত্রিক ব্যাপার: সকেট লাইনে রঙ লাগাও, ব্লেন্ড করে ফ্লিক করো ইত্যাদি৷ মানে বোঝা যেতো না৷''

আজ শুধু ইউটিউবেই তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা পনেরো লাখ৷ সব মিলিয়ে দেখা হয়েছে সাড়ে বারো কোটি বার! কাজেই লিজা এলড্রিজ তাঁর সব কাজ সত্ত্বেও এই অনলাইন টিউটোরিয়াল চালিয়ে যেতে চান৷

‘‘মানব সভ্যতার শুরু থেকেই মেক-আপ ছিল''

লিজা এলড্রিজের কাছে মেক-আপ শুধু লেটেস্ট ট্রেন্ড বা হালফ্যাশান নয়, মানব সংস্কৃতির অঙ্গ৷ এ বিষয়ে তিনি একটি বই লিখেছেন, নাম দিয়েছেন ‘‘ফেস পেন্ট''৷ এটাই তাঁর প্রথম বই৷ বই-এর উপজীব্য সম্পর্কে লিজা বললেন, ‘‘মানব সভ্যতার শুরু থেকেই মেক-আপ ছিল৷ গোড়ায় সুরক্ষার জন্য, দল বা গোষ্ঠীর প্রতি আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে, শত্রুদের ভয় দেখানোর জন্য৷ মেক-আপ নেওয়াটা আচার-অনুষ্ঠানের অঙ্গ ছিল৷''

‘‘ফেস পেন্ট'' বইটিতে প্রাচীন মিশর থেকে শুরু করে আধুনিক জগত পর্যন্ত মেক-আপের ইতিবৃত্ত শোনানো হয়েছে৷ লিজার মতে ‘‘মেক-আপের ওপর সোশ্যাল মিডিয়ার বিপুল প্রভাব পড়েছে৷ আমি এটাকে হলিউডের সূচনার সঙ্গে তুলনা করি৷ মহিলারা প্রথমে মেক-আপ নিতেন না; মেক-আপ ছিল স্বল্প কয়েকজনের জন্য, সাধারণের জন্য নয়৷ তারপরে এলো নির্বাক ছবি আর হলিউডের আমল৷ মহিলারা হঠাৎ তারকাদের মতো হয়ে উঠতে চাইলেন৷ এমন মেক-আপ তৈরি হল যাতে লিপস্টিকের জন্য দশ সেন্টের বেশি লাগে না৷ ‘ভদ্রঘরের মেয়েরা মেক-আপ নেন না' থেকে হয়ে গেল ‘সকলেই মেক-আপ নেয় আর মেক-আপ নিতে ভালোবাসে'৷ বর্তমানে ঠিক এই ধরনের একটা আমূল পরিবর্তন চলেছে৷''

সত্যিই গত দশ বছরে সারা দুনিয়ায় প্রসাধন সামগ্রী বিক্রি লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে৷ তার পিছনে লিজা এলড্রিজের মতো মহিলাদের অবদান কম নয়৷

শ্যারন ব্যারকাল/এসি

দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য