1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গর্ভে শিশুমৃত্যু কমছে

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৬ জানুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশে মৃত শিশু বা গর্ভকালীন শিশু মৃত্যুর হার কমলেও তা লক্ষ্য অর্জনের জন্য যথেষ্ট নয়৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মূল কারণ গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টি৷ তাঁরা বলেন, মায়ের পুষ্টি নিশ্চিত করা না গেলে মৃত্যুর হার দ্রুত কমানো সম্ভব নয়৷

https://p.dw.com/p/1Hk9C
Bangladesch illegale Flüchtlingssiedlung
ছবি: Shaikh Azizur Rahman

[No title]

গত বছরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৮৩,১০০ নবজাতকের মৃত অবস্থায় জন্ম হয়, যা ২০০০ সালের তুলনায় অর্ধেক৷ ২০০০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১,৬০,৩০০৷ এ তথ্য যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানচেট-এর৷

মৃত অবস্থায় নবজাতকের জন্ম প্রতিবছর শতকরা ৩.৪ ভাগ হারে কমছে বাংলাদেশে৷ কিন্তু এই হার পাঁচ ভাগের বেশি হওয়া উচিত, যদি ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হয়৷ বিশ্ব লক্ষ্য মাত্রায় অনুসারে, ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতি হাজারে মৃত শিশুর জন্ম ১২টির নীচে নামিয়ে আনার কথা৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২৮ সপ্তাহ বা ১,০০০ গ্রাম ওজনের শিশুদের এই শ্রেণিতে ফেলছে৷

আইসিডিডিআরবি-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ১,০০০টি শিশুর মধ্যে ২৫.৫টি শিশু মায়ের গর্ভেই মারা যায় অথবা মৃত অবস্থায় জন্ম নেয়৷ ২০০০ সালে প্রতি হাজারে এই সংখ্যা ছিল ৪২.৩ টি৷

নবজাতক এবং মাতৃমৃত্যুর হার যে হারে কমছে, গর্ভে শিশুমৃত্যুর হার সেই হারে কমছে না৷ বাংলাদেশে ২০১৫ সালে ৭৪,৪০০টি নবজাতক এবং ৫,৫০০ জন প্রসূতির মৃত্যু হয়৷ প্রতিবছর তা কমছে শতকরা ৩.৯ এবং ৫.৩ ভাগ হারে৷

এ নিয়ে বাংলাদেশ হৃদরোগ ইন্সটিউটের শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এর প্রধান কারণ গর্ভবতী মায়েদের অপুষ্টি৷ অর্থনেতিক অসচ্ছলতা এবং সঠিক জ্ঞানের অভাবে অর্ধেকেরও বেশি গর্ভবতী মা এখনো অপুষ্টিতে ভোগেন৷ মা অপুষ্টিতে ভুগলে গর্ভের শিশুও অপুষ্টিতে ভোগে৷ এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকও উদ্বিগ্ন৷''

তিনি জানান, ‘‘আমরা দেখেছি গর্ভবতী মায়েদের একটি অংশ ডায়াবেটিস রোগে ভোগেন৷ অনেকে আবার নানা ধরনের সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত হন৷ এর প্রধান কারণ ১৮ বছরের আগেই তাদের বিয়ে হয়ে যায় এবং তারা গর্ভধারণ করেন৷'' সরকারি হিসেবেও শতকরা ৬৫ ভাগ মেয়ের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যায় বাংলাদেশে৷

তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকার ‘কমিউনিটি ক্লিনিক' চালু করলেও এখনও সেই সেবা সবাই পান না৷ অদক্ষ ধাত্রী এবং দাইয়ে মাধ্যমে সন্তানের জন্ম হয়৷ এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে চাইলেই সবাই চিকিৎসকের সেবা নিতে পারেন না৷''

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এখনও ৫৮ ভাগ শিশুর জন্ম হয় অদক্ষ ধাত্রী বা দাইয়ের হাতে৷ তাছাড়া মাত্র ২৬ ভাগ গর্ভবতী মা সঠিক পরিচর্যা পেয়ে থাকেন৷

ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার জানান, ‘‘এ সব কারণেই গর্ভে মৃত্যু বা মৃত শিশুর জন্ম সন্তোষজনক হারে কমছে না৷''

দ্য ল্যানচেট-এর হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে ২০১৫ সালে ২৬ লাখ শিশু মৃত অবস্থায় জন্ম নেয় অথবা গর্ভেই মারা যায়৷ জানা যায়, এশিয়া এবং আফ্রিকার উন্নয়নশীল ও মধ্য আয়ের দেশের মায়েরাই প্রধানত মৃত শিশু জন্ম দিচ্ছেন৷ মৃত শিশুর সংখ্যার দিক বাংলাদেশের স্থান সপ্তম৷ তবে যে ১০টি দেশে মৃত শিশু জন্ম নেয়ার উচ্চ হার রয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ নেই৷

তাই ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ারের কথায়, ‘‘গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি, চিকিৎসা এবং পরিচর্যাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে৷ কারণ মা সুস্থ না থাকলে গর্ভের সন্তানও সুস্থ থাকবে না৷''

বন্ধু, আপনি কি ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ারের সঙ্গে একমত৷ জানান আপনার মতামত, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য