1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন মোড়কে পুরোনো ধারা?

সমীর কুমার দে, ঢাকা১২ জানুয়ারি ২০১৬

‘ডিজিটাল ডিভাইস' ব্যবহার করে পরিচালিত সব ধরনের নেতিবাচক কার্যক্রম আইনের আওতায় আনতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করতে যাচ্ছে সরকার৷ পাশাপাশি তথ্য-প্রযুক্তি আইন থেকে বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ চারটি ধারা বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে৷

https://p.dw.com/p/1HboJ
Symbolbild Pressefreiheit
ছবি: picture-alliance/dpa/I. Langsdon

[No title]

তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বা ‘আর্টিকেল-৫৭' বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের অন্তরায় বলে আলোচিত ও সমালোচিত হয়ে আসছিল৷ আইনের এই ধারাটি জামিনযোগ্য নয়৷ এছাড়া এই ধারায় অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪, সর্বনিম্ন সাত বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে৷ সর্বশেষ এই আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সাংবাদিক প্রবীর শিকদারকে৷ যদিও সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে আদালত শেষ পর্যন্ত তাঁকে জামিন দেয়৷ আর নতুন এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে৷ প্রশ্ন উঠেছে, বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাতিল করার নামে তাহলে কি সরকার আরো কঠোর কোনো আইন প্রণয়ন করতে চলেছে?

বাংলাদেশের তিনজন আইনজীবী ইতিমধ্যেই অবশ্য ঐ ৫৭ ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন৷ ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার একটি রিট নিয়ে গত বছরের ১লা সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ৫৭ ধারা কেন সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না – তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন৷ এটি এখনও শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে৷

নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নতুন এই আইনে কী থাকছে, তা আমরা এখনও জানি না৷ নতুন আইন প্রণয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ চারটি ধারা বাতিলের কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী৷ এখন কথা হলো, এই ধারাগুলো এখান থেকে বাদ দিয়ে যদি নতুন আইনে ঢোকানো হয়, তাহলে তা হবে নিন্দাযোগ্য৷ অবশ্য সত্যিই যদি ৫৭ ধারা বাদ দেয়া হয়, তাহলে এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই৷ তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হওয়ার আগে এটি নিয়ে আলোচনা ও জনমত নেয়ার দরকার ছিল৷ আমরা আশা করি, নতুন এই আইনে অবশ্যই যেন বিতর্কিত কিছু না থাকে৷''

অথচ যে প্রক্রিয়ায় নতুন আইনটি হচ্ছে, তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়৷

গত বছরের ২৫ আগস্ট ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষৎকারে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিচালক নূর খান বলেছিলেন, আসক-এর কাছে ১১ জনের তথ্য রয়েছে, যাঁরা এই আইনের অপব্যবহারের শিকার হয়ে কারাগারে আটক আছেন৷

তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের কথায়, ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে নতুন আইন হওয়া প্রয়োজন৷ তবে বিতর্ক তৈরি হয় – এমন কোনো কিছু বলা, মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতা চর্চার জন্য কারাদণ্ড হতে পারে না৷ তাছাড়া বইয়ে লেখার জন্য একরকম এবং অনলাইনে লেখার জন্য আরেকরকম শাস্তি হতে পারে না বলেও মত দেন তাঁরা৷

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক রবিবার এ প্রসঙ্গে বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সরকার সাইবার অপরাধকে দেশের সবচেয়ে বড় অপরাধ হিসাবে গণ্য করছে৷ তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হলে তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি আইন থেকে ৫৪, ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ ধারা বাতিল করা হবে এনং ধারাগুলো নতুন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে৷ তবে ঠিক কীভাবে সেটা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি আইনমন্ত্রী৷

রবিবার সচিবালয়ে আইন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া পর্যালোচনা করা হয়৷ বৈঠকে আইনমন্ত্রী ছাড়াও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি ও আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক উপস্থিত ছিলেন৷

বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ আইনের ৪৩টি ধারা আমরা যাচাই-বাছাই করেছি৷ কিছু কিছু জায়গা ছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় যে খসড়া প্রস্তুত করেছে, আমরা তাতে সম্মতি দিয়েছি৷ তবে কিছু কিছু জায়গা সংশোধন করা হবে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘কিছুদিন আগেও তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ছিল৷ আমার মনে হয় সেসব আলোচনা, দুশ্চিন্তা, শঙ্কা এবার দূর হবে৷''

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘অনলাইনে একটি অপরাধ হলে তার প্রভাব অনেক বেশি, প্রচারও বেশি৷ অফলাইনে সেটা কম৷ তাই অনলাইনের অপরাধ রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি করা হচ্ছে৷''

তাঁর কথায়, এখন একটি রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য অ্যাটম বোমা হামলার প্রয়োজন নেই৷ সাইবার আক্রমণ করে একটি রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিকভাবে এবং প্রশাসনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা যায় এখন খুব সহজেই৷

বন্ধুরা, আপনার কী মনে হয়? ৫৭ ধারা বাতিল করে নতুন আইন করা সরকারের কি কোনো নতুন চাল?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান