1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাত

জাহিদুল হক৫ জানুয়ারি ২০১৬

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশকে ‘উচ্চ ঝুঁকি’ ক্যাটাগরিতে রেখেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, টিআই৷ এই খাত দু’টির তথ্য গোপন রাখার প্রবণতা এর কারণ বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এই সংস্থা৷

https://p.dw.com/p/1HYEm
Armee Bangladesch Dhaka
ছবি: DW/M. Mamun

টিআই এর যুক্তরাজ্য শাখার প্রকাশিত ‘গভর্নমেন্ট ডিফেন্স অ্যান্টি-করাপশন ইনডেক্স ২০১৫'-তে বাংলাদেশকে ‘ব্যান্ড ডি'-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা খাতের অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে দেশগুলোকে এ, বি, সি, ডি, ই এবং এফ – এই ছয় ক্যাটাগরিতে স্থান দেয়া হয়েছে৷ বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে ‘ই' আর ‘এফ', অর্থাৎ ‘অতি উচ্চ ঝুঁকি' ও ‘সংকটাপন্ন' ক্যাটাগরিতে থাকা দেশগুলোতে৷

সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান বোঝাতে গিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা ব্যয় দিন দিন বাড়ছে৷ কিন্তু সেই তুলনায় এই খাতে স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতার ঘাটতি রয়েছে৷ জনগণের জন্য জনগণের অর্থে প্রতিরক্ষা খাত পরিচালিত হলেও জনগণের কাছে তথ্য প্রকাশের বিষয়টি খুবই দুর্বল৷''

[No title]

তিনি বলেন, ‘‘তথ্য যত গোপন করা হয়, তথ্য যত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকে, তত বেশি দুর্নীতি বা অনিয়মের ঝুঁকি থাকে বলে ধারণা করা হয়৷ বাজেট বক্তৃতায় শুধু গত বছর প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট কত ছিল, আর এবার সেটা কত হয়েছে, তা জানানো হয়৷ এর বেশি কোনো তথ্য প্রকাশিত হয় না৷'' অবশ্য ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘টিআই-এর প্রতিবেদন বলছে না যে, এখানে দুর্নীতি হচ্ছে, যেটা বলছে যে, দুর্নীতির ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে৷''

বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাত সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে তথ্য অধিকার আইনের বাইরে রাখা হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের যেসব দেশে তথ্য অধিকার আইন রয়েছে সেগুলোর প্রতিটিতেই একটি ‘অব্যাহতি তালিকা', অর্থাৎ আইনের বাধ্যবাধকতা বহির্ভূত একটি তালিকা থাকে৷ বাংলাদেশের বেলায়ও সেটি আছে৷ কিন্তু বিষয়টি হচ্ছে আমাদের তালিকাটা দীর্ঘ৷ এ ব্যাপারে নাগরিক সমাজ সবসময় উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে৷''

টিআইবি-র এই কর্মকর্তা মনে করেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিরক্ষা খাত সংশ্লিষ্ট তথ্য জানার অধিকার জনগণের রয়েছে৷ আর সেটি নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ মাধ্যম হলো জাতীয় সংসদ৷ ‘‘সেই জাতীয় সংসদের কতখানি এক্তিয়ার রয়েছে, কতখানি পর্যবেক্ষণের চর্চা রয়েছে, সেটা কিন্তু নিরূপণ করে দেয় প্রতিরক্ষা খাত কতখানি জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করছে৷ আমাদের বেলায় যেটা দেখা যাচ্ছে, আমাদের একটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি আছে, কিন্তু সেই কমিটির বাস্তবে খুব কার্যকারিতা আছে বলে কেউ মনে করেন না৷ এই বিষয়টিরও প্রতিফলন ঘটেছে টিআই এর প্রতিবেদনে'', বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান৷

সংসদীয় কমিটির এমন হাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিরক্ষা শব্দটিই যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে৷ এই যে একটি সংস্কৃতি, সেটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি এখনও৷'' তবে এই পরিবেশ পরিবর্তনের সুযোগ আছে এবং সরকারই সেই সুযোগ তৈরি করেছে বলে জানান তিনি৷ ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘সরকারের একটি ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল' আছে৷ এর মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত আছে সেখানে প্রত্যক্ষভাবে প্রতিরক্ষা খাত না তাকলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যা একটি সুসংবাদ৷''

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ইউকে চ্যাপ্টার বেশ কয়েকবছর ধরে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে দুর্নীতি বিষয়ে সূচক প্রকাশ করছে৷ তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে দু'বার সম্পৃক্ত করে এই সূচক প্রকাশিত হয়েছে৷ সবশেষটি প্রকাশ হয় ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে৷ বাংলাদেশের মতো একই ক্যাটাগরিতে আছে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন্স, রাশিয়া, পর্তুগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্কের মতো দেশ৷ আর বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ অবস্থায় আছে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, চীন ও থাইল্যান্ড সহ অন্যান্য দেশ৷

ড. ইফতেখারুজ্জামানের এই সাক্ষাৎকারটি আপনার কেমন লাগলো? নীচের ঘরে জানান আপনার মতামত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য