1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হামলার বছর ২০১৫

২৯ ডিসেম্বর ২০১৫

বাংলাদেশ একদিকে যেমন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে, অন্যদিকে ব্লগার, বিদেশি, পুলিশ, সংখ্যালঘু, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা দিচ্ছে অশনি সংকেত৷

https://p.dw.com/p/1HVik
Bangladesch Protest gegen den Angriff auf Ahmedur Rashid Chowdhury Tutul
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/Z. H. Chowdhury

২০১৫ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক নতুন পরিচয় পেয়েছে৷ নিয়মিত জবাই করে মানুষ হত্যার বর্বরতম ঘটনা বিশ্বের অল্প যে কয়টি দেশে এখনো ঘটছে, তার মধ্যে ভালোভাবে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ৷ এমন নয় যে, এর আগে মুসলিমপ্রধান দেশটিতে জবাই করে কাউকে খুন করা হয়নি৷ সেটা হয়েছে নিশ্চয়ই৷ তবে ২০১৫ সালে তার পরিধি অনেক বেড়ে গেছে৷ জবাই হয়েছেন চার ব্লগার, এক প্রকাশকসহ বেশ কয়েকজন পীরের মুরিদ৷ ব্লগার হত্যার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম' এবং ‘আনসার আল-ইসলাম৷'

আরেকটি উদ্বেগজনক ব্যাপার হচ্ছে, দু'জন বিদেশি হত্যাকাণ্ড৷ দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে বিদেশিদের উপর সচরাচর হামলা হয় না৷ বড়জোড় ছিনতাই কিংবা চুরির ঘটনা তাদের সঙ্গে ঘটেছে বহুবার৷ কিন্তু এবারই এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুন হয়েছেন দুই বিদেশি৷ তাঁদের একইরকমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে৷ পাশাপাশি শিয়াদের উপর দু'টি হামলার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে দুই ব্যক্তি৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অনেক ঘটনা ঘটলেও শিয়াদেরে হত্যা এবারই প্রথম, স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সেটাই বলছে৷ বড়দিনে আহমেদিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হয়েছে হামলাকারী নিজে, আহত অনেক৷ এ সব হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট'৷

এছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশ৷ ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে চট্টগ্রামে নৌ-বাহিনীর সুরক্ষিত ঘাঁটির মধ্যে অবস্থিত মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ এক বছরের মধ্যে এত হামলায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন মহলে৷

এখানে লক্ষ্যণীয় হচ্ছে, বাংলাদেশে এমন এক সময়ে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন গোষ্ঠীর উপর হামলা হচ্ছে, যখন বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো কার্যত নিরব হয়ে গেছে কিংবা সরকারের চাপে নিরব থাকতে বাধ্য হচ্ছে৷ নৈতিক বিবেচনায় দুর্বল একটি নির্বাচন জয়ের পর ক্ষমতায় থাকা বর্তমান সরকার বিরোধী দলের আন্দোলনকে যতটা সফলভাবে দমনে সক্ষম হচ্ছে, গণমাধ্যমকে যতটা শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে, ততটাই ব্যর্থ হচ্ছে ব্লগার, বিদেশি, সংখ্যালঘু, পুলিশ, সেনা সদস্যদের উপর হামলা ঠেকাতে৷ বরং ‘হেফাজতে ইসলাম' নামে মৌলবাদীদের একটি গোষ্ঠী, যারা প্রকাশ্যে ‘ইসলামিক স্টেট'-এর কর্মকাণ্ডের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের একটি সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে৷ সরকার এই দাবির বিপক্ষে কিছু বলছে না৷

DW Bengali Arafatul Islam
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

বিভিন্ন গোষ্ঠীর উপর এ সব হামলা নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের পুনরুত্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে৷ ‘ইসলামিক স্টেট' সাফ জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশে ‘খেলাফত' প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছে তারা৷ যদিও বাংলাদেশ সরকার এখন তাদের কোনো অস্তিত্ব দেশটিতে স্বীকার করছে না৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ে নিরাপত্তা বাহিনী অনেককে গ্রেপ্তার করেছে যাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে৷

২০১৫ সালে সংগঠিত ধারাবাহিক এসব হামলা বিবেচনায় আনলে নতুন বছরটি কেমন হবে তা নিয়ে ইতিবাচক চিন্তা করা কঠিন৷ বরং এভাবে হামলা বাড়তে থাকলে বাংলাদেশ আরো অনিরাপদ একটি রাষ্ট্রে পরিনত হবে, যদিও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নতুন বছরকে ‘পর্যটনের' বছর ঘোষণা দিয়েছেন৷

২০১৬ সাল নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী? লিখুন মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য