1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেশত্যাগী এক নারী ব্লগারের কথা

আরাফাতুল ইসলাম১৫ ডিসেম্বর ২০১৫

শাম্মী হক কি ব্লগার? এই প্রশ্ন অনেকবার শুনেছি৷ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম কর্মী শাম্মী হক এখন আছেন জার্মানিতে৷

https://p.dw.com/p/1HNCN
Bangladesch Bloggerin Shammi Haque
ছবি: DW/G. Ketels

শাহবাগ আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে মূলত পরিচিত শাম্মী হক৷ ধর্মে বিশ্বাসী নন, অর্থাৎ নাস্তিক আর ইস্টেশন নামক একটি গ্রুপ ব্লগের সদস্য প্রায় আড়াই বছর ধরে৷ যদিও সেখানে খুব বেশি লেখেননি তিনি৷ তবে ফেসবুকে তিনি নিয়মিত লেখালেখি করেন৷ শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের এক অতিপরিচিত মুখ৷ তাঁকে ব্লগার বলা যাবে কিনা সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে৷ এই বিতর্ক আসলে শুধু হক নন, আরো অনেককে নিয়ে৷ এককালে ব্লগাররা লিখতেন বিভিন্ন ব্লগ প্ল্যাটফর্মে, কিংবা নিজস্ব ওয়েবসাইটে৷ এখন অনেক বাংলা ব্লগারই মূলত লেখেন ফেসবুকে৷

ফেসবুকে শুধু ব্লগার হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিতরাই যে লেখেন তা নয়৷ সবাই লিখতে পারেন সেখানে৷ কারো লেখা অনেক মানুষ পড়েন, কারোটা অল্প মানুষ৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যাঁরা ফেসবুকে লেখেন তাঁরা সবাই কি ব্লগার?

ব্লগার ঠিক কারা তা সংজ্ঞায়িত করা ক্রমশ দুরুহ হয়ে উঠছে৷ ডয়চে ভেলের অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অ্যাওয়ার্ড দ্য বব্স-এ একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ফেসবুক প্রোফাইলকে ব্লগ হিসেবে না নেয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা গিয়েছিল৷ কিন্তু চলতি বছর আর তা রাখা যায়নি৷ কারণ ফেসবুকে বিষয়ভিত্তিক লেখালেখি যেভাবে বেড়েছে, তেমনি ফেসবুকও বিভিন্ন ফিচারের মাধ্যমে ব্লগ লেখার জন্য আলাদা পাতার গুরুত্ব কমিয়ে দিচ্ছে৷ মোটের উপর ফেসবুকে লিখলে সাড়া অনেক বেশি পাওয়া যায়৷ ফলে ঠিক কাদের ব্লগার বলা যাবে, কাদের যাবে না, সেটা বিবেচনার নিয়ে তাঁদের লেখা এবং কাজের দিকে গুরুত্ব দিতে হচ্ছে বেশি৷

বাংলাদেশে চলতি বছর যে কয়জন ব্লগার খুন হয়েছেন, তাঁরা সবাই নাস্তিক হিসেবে পরিচিত এবং ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন৷ সর্বশেষ খুন হওয়া প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করেছিলেন৷ ধারণা করা হয়, সেকারণেই মৌলবাদীদের হামলার শিকার তিনি৷ এরকম এক পরিস্থিতিতে কারা হামলার শিকার হতে পারেন, কারা হবেন না আগেভাবে সেই ধারণা করাও কঠিন৷

এখানে বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশে নারী সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্টদের উপর হামলার শঙ্কাও ক্রমশ বাড়ছে৷ মাত্র কিছুদিন আগেই নারী সাংবাদিকদের হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম', যারা ব্লগার হত্যার দায় স্বীকার করেছে একাধিকবার৷ গত অক্টোবরে ই-মেলে পাঠানো সেই হুমকিতে সংবাদমাধ্যমের নারী সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুত করতে বলা হয়েছে৷ এতে যাঁরা নাস্তিকতার চর্চা কিংবা সমর্থন করেন, তাঁদের পরিণতি খুন হওয়া ব্লগারদের মতো হবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠীটি৷

DW Bengali Arafatul Islam
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

আনসারুল্লাহ-র এই হুমকি প্রদানের কয়েকদিন পরই দুই প্রকাশক এবং দুই ব্লগারের উপর হামলা হয়৷ এতে এক প্রকাশক খুন হন, তবে গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান অপর প্রকাশক এবং দুই ব্লগার৷ ফলে যাঁরা মুক্তমনা কিংবা নাস্তিকতার চর্চা করছেন কিংবা নাস্তিকদের সহায়তা করছেন, তাঁরা ব্লগার কিংবা অ্যাক্টিভিস্ট কিংবা সাংবাদিক, যাই হোক না কেন বর্তমানে যে ঝুঁকির মুখে আছেন, তা অনেকটাই পরিষ্কার৷

শাম্মী হকসহ একাধিক নারী ব্লগার, অ্যাক্টিভিস্ট ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন৷ ফলে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে তাই শঙ্কিত পশ্চিমা বিশ্ব৷ যে কারণে এমন শঙ্কায় থাকারা অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও সুযোগ পেলে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন জীবন বাঁচাতে৷ সমস্যা হচ্ছে, এটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়৷ স্থায়ী সমাধান বের করতে হবে বাংলাদেশকেই৷ বর্তমান সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে, ধর্ম বিশ্বাসীদের মতো অবিশ্বাসীরাও সেদেশে নিরাপদে, স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারবেন৷

প্রশ্ন হচ্ছে, সেই নিশ্চয়তা কি সরকার দেবে? আপনার কী মনে হয়? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য