1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ভয়ের সংস্কৃতি’ আর ‘স্বেচ্ছা নিয়ন্ত্রণ’

২৯ অক্টোবর ২০১৫

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে, ব্লগে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রমশ কি একটা ‘ভয়ের সংস্কৃতি’ তৈরি হচ্ছে? একদিকে ৫৭ ধারা, অন্যদিকে বিজ্ঞাপন হারানোর ভয়৷ ভয়ের মাঝেই হারিয়ে যাচ্ছে বাকস্বাধীনতা৷

https://p.dw.com/p/1Gwb5
Bangladesch Protest gegen Ermordung von US-Blogger (Bildergalerie)
ছবি: DW

ইদানীং প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে এক অদ্ভুত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি আমি, আমার সহকর্মীরা৷ কোন বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে অনেক তথ্য পাওয়া যায়৷ কিন্তু সেসব তথ্য লিখতে গেলেই যত বাধা৷ সুন্দর করে একটি বিষয় বলার পর বক্তব্যদাতা বলে দেন, ভাই আমার নাম উল্লেখ করে এসব লিখবেন না কিন্তু৷ বোঝেনইতো যা অবস্থা এখন

আমার সহকর্মী, ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ সেদিন গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয়ে বক্তব্য নেবার জন্য এক জায়গায় ফোন করলেন৷ ওয়েবসাইটে পাওয়া নম্বরে ফোন করার পর একজন সেই ফোন ধরলেন, কথা বললেন৷ তবে শেষে বলে দিলেন যা বলেছি তা লিখবেন না৷ পাশাপাশি সেই ব্যক্তি নিজের পরিচয় না দিয়ে আমার সহকর্মীকে চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন৷ বলেছেন, তিনি তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হতে চান৷ তবে তার বলার ভঙ্গি মোটেই ইতিবাচক ছিল না৷

বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় এক পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে আমার এক সহকর্মীর কথোপকথন শুনছিলাম৷ তাঁর পত্রিকা সমস্যায় পড়েছে৷ অনানুষ্ঠানিকভাবে সবাই জানাচ্ছে সমস্যা কোথায়৷ কিন্তু তিনি কারা সমস্যা তৈরি করেছে তা চমৎকারভাবে এড়িয়ে গেলেন৷ সমস্যা যে হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে তা বাড়বে সেটা জানিয়েছেন পরিষ্কারভাবেই৷ আমি অবাক হয়েছি৷ যার কথা বলছি, তিনি আমাদের মতো সাংবাদিকদের জন্য আদর্শ৷ বুঝতে পারি, কতটা ভয়, কতটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে দেশে, যে এত উঁচু মাপের একজন সম্পাদককে সযত্নে সবার জানা সত্যটা আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে এড়িয়ে যেতে হচ্ছে৷ অথচ সাহসী সাংবাদিকতার জন্য তাঁর পত্রিকা পরিচিত, তাঁর পত্রিকার বিশ্বাসযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি৷

এত গেল মূলধারার পত্রিকার কথা৷ ব্লগের পরিস্থিতি আরো উদ্বেগের৷ তালিকা ধরে চলতি বছর খুন হয়েছেন চার ব্লগার৷ ইন্টারনেটে লেখালেখির উপরে এটা কত বড় ধাক্কা তা যারা এসব নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করেন, তারা ভালো বোঝেন৷ বাংলাদেশে বড় কোন ঘটনা ঘটলে আগে যতটা প্রতিক্রিয়া হতো, এখন আর তা হয়না৷ নামজাদা ব্লগারদের মধ্যে ‘স্বেচ্ছা নিয়ন্ত্রণ' চলে এসেছে৷ রাজনৈতিক, ধর্মীয় বিষয়াদি নিয়ে লেখালেখি অনেক কমে গেছে৷ অকালে কে জীবন হারাতে চাইবে বলুন৷

DW Bengali Arafatul Islam
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি পর্যবেক্ষক সংগঠন ফ্রিডম হাউসের এক রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে গতকাল৷ রিপোর্টটা তৈরির সময় সংশ্লিষ্ট একজন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল৷ আগেই জানতাম, তারা পরিস্থিতি কিছুটা তুলে ধরবেন৷ তবে এই রিপোর্টে যা প্রকাশ হয়েছে, বাস্তব অবস্থা তারচেয়ে অনেক খারাপ৷ সমস্যা হচ্ছে, এটা সবাই জানে, কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করতে চাইবে না৷ বোঝেনতো, দেশেই যা অবস্থা...৷

আপনি কি কিছু বলতে চান? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য