1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেসবুক পোস্টিং-এর জন্য গ্রেপ্তার

আরাফাতুল ইসলাম/এসি১০ অক্টোবর ২০১৫

সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকে পোস্টিং-এর জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশে বেশ কিছু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এবং সেটা করা হয়েছে ‘৫৭ ধারার’ আওতায়৷ ব্লগারদের মতে, এটা বাকস্বাধীনতাকে খর্ব করার একটা প্রচেষ্টা মাত্র৷

https://p.dw.com/p/1GkWX
Facebook Logo Markenwert Symbolbild
ছবি: Imago/R. Wölk

গত ৩০শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ ‘‘ইসলামের বিরুদ্ধে অপ্রীতিকর মন্তব্য'' করার দায়ে মাগুরার এক স্কুলের ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে৷ ১৫ বয়স বছরের কিশোরটি নবম শ্রেণিতে পড়ে৷ তাকে যে আইনে গ্রেপ্তার করা হয়, সেটি প্রণীত হয় ২০০৬ সালে এবং সংশোধিত হয় ২০১৩ সালে৷

সংশ্লিষ্ট আইনের এক্তিয়ারে প্রথম গ্রেপ্তারির ঘটনা ঘটে ২০১৩ সালে৷ সে'বছরের এপ্রিল মাসে চারজন ব্লগারকে আটক করা হয় একটি ধর্মের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচারের' দায়ে৷ ইতিপূর্বে মৌলবাদীরা নাস্তিক ব্লগারদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন করেছিল৷ সে'যাবৎ একশ'র বেশি মানুষকে ঐ আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

১৪ বছরের কারাদণ্ড, কিংবা জরিমানা

২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন বা আইসিটি অ্যাক্ট দু'বার সংশোধন করা হয়েছে৷ এই আইনের ৫৭ ধারাটি বিশেষভাবে বিতর্কিত৷ সেই ধারা অনুযায়ী যদি কেউ ইন্টারনেটে বা ডিজিটাল উপায়ে কোনো ‘‘ভুল বা অশ্লীল'' লেখা প্রকাশ করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে৷ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে, কিংবা রাষ্ট্র তথা কোনো ব্যক্তির ভাবমূর্তির ক্ষতি করতে পারে, কিংবা কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিতে পারে, এমন সব লেখাও এই আইনের আওতায় পড়ে৷

ব্লগাররা এই ধারার অপসারণ দাবি করে আসছেন; যেমন ২০১৩ সালে গ্রেপ্তারকৃত চারজন ব্লগারদের মধ্যে যে তিনজন আজ বিদেশে বাস করছেন৷ তাঁদের একজন, সুব্রত শুভ, আজ সুইডেনে বাস করেন৷ সুব্রত ডিডাব্লিউ-কে বলেন যে, ৫৭ ধারার কারণে আজ অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছেন; ফলে সরকারের বিরুদ্ধে আর কেউ কিছু লিখতে সাহস পাচ্ছেন না৷ ফেসবুকে একটি মামুলি ‘‘লাইক'' দেবার অপরাধেই সাত থেকে ১৪ বছরের কারদণ্ড কিংবা এক কোটি টাকা জরিমানা হতে পারে, বলেন সুব্রত৷

রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের হয়রান করার পন্থা?

রাসেল পারভেজ-ও ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন৷ তাঁর মতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আইনটির অপব্যবহার করা হচ্ছে৷ যেমন কিছু মানুষকেআটক করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করার দায়ে৷ গতবছর এক তরুণকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় শেখ মুজিব ও তাঁর কন্যা সম্পর্কে একটি ব্যঙ্গাত্মক গান শেয়ার করার অপরাধে৷ গতমাসে এক সাবেক মেয়রকে গ্রেপ্তার করা হয় শেখসাহেবের বিরুদ্ধে ‘‘অবমাননাকর মন্তব্য'' করার দায়ে৷ পারভেজ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইন্টারনেটের উপর নজর রাখার জন্য বিশেষভাবে তৈরি৷ ফলে শাসকদলের সদস্যরা তাদের অপছন্দের লোকেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন আর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে৷''

ঢাকার আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া একাধিক ব্লগারের কৌঁসুলি ছিলেন৷ আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা বাতিল করা উচিত, বলে তিনি মনে করেন৷ বড়ুয়া জনস্বার্থে এই ধারার সাংবিধানিকতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এবং ইতিবাচক ফল পাবার আশা রাখেন, বলে ডিডাব্লিউ-কে জানান৷

একটি ফেসবুক গ্রুপের মহৎ উদ্যোগ

বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ৫৭ ধারা বাতিল করার আহ্বান নাকচ করলেও, আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ ডয়চে ভলের ঢাকাস্থ প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ স্বপনকে একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, সরকার ৫৭ ধারা পুনর্বিবেচনা করবেন৷ ‘‘যে সব আন্দোলনকারী এই ধারা বাকস্বাধীনতা খর্ব করছে বলে মনে করেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব, তাঁদের উদ্বেগ বোঝার চেষ্টা করব৷'' তবে তিনি আশু পরিবর্তনের কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি৷

বিশ্বাস হয় যে, ফেসবুকে ‘লাইক’ দিলে জেল হতে পারে? জানিয়ে দিন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য