1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউক্রেনে এমএইচ১৭ উড়াল

গেরো শ্লিষ/এসি৩০ জুলাই ২০১৫

ইউক্রেনে এমএইচ১৭ উড়ালটি ভূপাতিত হওয়ার ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া৷ স্থায়ী সদস্যদের ভেটো প্রদানের অধিকার বাতিল করার সময় এসেছে, বলে মনে করেন ডয়চে ভেলের গেরো শ্লিষ৷

https://p.dw.com/p/1G7HI
Ukraine Trümmer Malaysia Airlines Flug MH17
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Zykina

ইউক্রেনের আকাশে এমএইচ১৭ যাত্রীবাহী বিমানটি কিভাবে দুর্ঘটনায় পতিত হলো, সে বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্ত দাবি করে মালয়েশিয়া এবং অপরাপর দেশ রাশিয়াকে চাপের মুখে ফেলতে চেয়েছিল৷ কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি৷ জুলাই মাসের গোড়ায় রাশিয়া সেব্রেনিৎসায় গণহত্যা সংক্রান্ত প্রস্তাবটি রুখে দেয়৷ এবার মালয়েশিয়ার আনীত প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই ঘটেছে৷

২০১৪ সালের ১৭ই জুলাই তারিখে এমএইচ১৭ উড়ালের দুর্ঘটনায় ২৯৮ জন মানুষ প্রাণ হারান৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অধিকাংশ দেশের মতে পূর্ব ইউক্রেনের রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই রকেট ছুঁড়ে বিমানটিকে ভূপাতিত করে৷ অপরদিকে রাশিয়া কিয়েভ-এর ইউক্রেন সরকারকেই দায়ী করে থাকে৷

বাধার পরে বাধা

জাতিসংঘ যে এ যাবৎ অপরাধীদের নামকরণ অথবা শাস্তিদানে কোনো অবদান রাখতে পারেনি, তা একটা কেলেঙ্কারি বিশেষ৷ বছর খানেক আগে নিরাপত্তা পরিষদ যে জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম বা যৌথ তদন্ত গোষ্ঠী নিয়োগ করে, তাদের রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি৷ গোষ্ঠীতে আছেন মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ইউক্রেন ও নেদারল্যান্ডস-এর বিশেষজ্ঞরা৷ কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছেন রাশিয়া তথা ইউক্রেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তদন্তে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করার ফলে৷ এবার নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার ভেটো থেকে বোঝা যাচ্ছে, ভবিষ্যতেও সহযোগিতার বিশেষ আশা নেই৷

Schliess Gero Kommentarbild App
ডয়চে ভেলের গেরো শ্লিষ

এক মাসের মধ্যে রাশিয়া দু'বার ভেটো প্রয়োগ করল৷ এটা সম্ভবত একটি গভীর এবং দীর্ঘমেয়াদি বিরোধিতার লক্ষণ৷ এমনও হতে পারে যে, নিরাপত্তা পরিষদে ঠান্ডা লড়াই-এর তুমুল বিতর্ক ও অনমনীয় অবস্থানের দিনগুলি ফিরে আসতে চলেছে৷

রাজনৈতিক চাল হিসেবে ভেটোর ব্যবহার

শুধু রাশিয়াই যে ভেটোর ক্ষমতা ব্যবহার করে থাকে, এমন নয়৷ গতবছর গাজা স্ট্রিপে ইসরায়েলি অভিযানের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রয়োগ করে ইসরায়েলের নিন্দা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব রুখে দেয়৷ অপর একটি প্রস্তাবে সিরিয়ার রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের অন্ত ঘটানোর প্রচেষ্টা করা হয়েছে – এবং প্রেসিডেন্ট আসাদ-এর নির্দেশে ব্যাপক মানবাধিকার ভঙ্গের কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ কিন্তু আজ অবধি সে প্রস্তাব রাশিয়ার প্রতিরোধে গৃহীত হতে পারেনি৷ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংঘাত ও অন্যান্য বিষয়ে নীরব থেকে নিরাপত্তা পরিষদ নিজেরই ব্যাপক ক্ষতি করেছে৷ ভেটোর অধিকারের ফলে স্ব-আরোপিত নিষ্ক্রিয়তা থেকে নিরাপত্তা পরিষদের কার্যকরিতা সম্পর্কে ক্রমেই আরো বেশি সন্দেহ ধ্বনিত হচ্ছে৷ যে নিরাপত্তা পরিষদ নিজেই নিজের হাত-পা বেঁধে রেখেছে, তেমন একটি নিরাপত্তা পরিষদের কোনো প্রয়োজন আছে কি?

ভেটোর দিন ফুরিয়েছে

অনেক আগেই জাতিসংঘের সংস্কার ঘটা উচিত ছিল৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে পাঁচটি দেশের জন্য ভেটো ক্ষমতার ব্যবস্থা রাখা হয়৷ আজ আর তা সময়োচিত নয়৷ কিন্তু এই বহুল আলোচিত দাবি এখনও অবধি নিরাপত্তা পরিষদের কোনো অধিবেশনের নির্ঘণ্টে স্থান পায়নি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন যে নিজে থেকেই তাদের অগ্রাধিকারের এই নিদর্শন ত্যাগ করবে, এতটা আশা করা উচিত হবে না৷ ভেটোর অধিকার বাতিলের প্রতিটি প্রচেষ্টা তারা ঐ ভেটো দিয়েই বানচাল করবে৷

ফ্রান্স সম্প্রতি যে প্রস্তাবটি দিয়েছে, তা একটি নবসূচনা হতে পারে৷ রুয়ান্ডায় গণহত্যার মতো বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে ভেটোর অধিকার স্থগিত রাখার প্রস্তাব দিয়েছে ফ্রান্স৷ এর সুবিধা হলো এই যে, সংকটকালীন পরিস্থিতিতে মানবিক সাহায্যের মতো বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদ শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে গৃহীত প্রস্তাবের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে পারবে৷ কিন্তু এ ধরনের উচ্চাভিলাষ বিহীন সংস্কারও জাতীয় স্বার্থের রাজনীতির বেড়াজালে আটকা পড়ে থাকতে বাধ্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য