স্ট্রিট আর্ট
৩০ জুলাই ২০১৫পুরানো ডিজাইন, যা শহরকে আরও সুন্দর করে তুলবে – এটাই স্ট্রিট আর্ট শিল্পী নেস্পুন-এর আইডিয়া৷ পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ শহরের অনেক রাস্তায় তাঁর কাজ শোভা পাচ্ছে৷ সেগুলি দেখে স্থানীয় মানুষ বেশ খুশি৷ একজন বললেন, ‘‘দেখলে মনে হয় ক্রিস্টমাস ডিজাইনের টেবিল কভার৷ খুব সুন্দর৷'' আরেকজনের ভাষায়, ‘‘বেশ মজার৷ দেখলে ছোট টেবিল কভারের কথা মনে আসে৷''
বছর ছয়েক আগে পর্যন্ত এই শিল্পী এক নাগরিক আন্দোলনের হয়ে কাজ করেছেন৷ তারপর তিনি বর্তমান কাজের ধারা শুরু করে নিজের নাম বদলে নেস্পুন রাখেন৷ নতুন উপকরণ দিয়ে কাজও শুরু করেন৷ নেস্পুন বলেন, ‘‘লেস আমার খুব ভালো লাগে, কারণ সব সংস্কৃতিতেই তা পাওয়া যায়৷ ডিজাইনগুলি বৌদ্ধ মান্ডালা-র মতো৷ অর্থাৎ সঙ্গতি, ভালবাসা, নীরবতার মতো সুন্দর আবেগ৷''
তিনি এখানেই প্রেরণা পান৷ ওয়ারশ শহরে খুব কম দোকানেই এখনো পুরানো ঐতিহ্যপূর্ণ হাতের কাজ পাওয়া যায়৷ নেস্পুন এখানে নিয়মিত নিজের ডিজাইনের মালমশলা খোঁজেন৷ পরে নিজের বাড়িতে সেগুলি প্রস্তুত করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘পোল্যান্ডে লেস-এর বিশাল ঐতিহ্য রয়েছে৷ পাহাড়ে কোনিয়াকু নামের ছোট্ট গ্রামে এক ধরনের লেস তৈরি হয়৷ আমি দেখাতে পারি৷ সেগুলি খুবই নাজুক এবং তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন৷''
ঊনবিংশ শতাব্দীতে হাতে বোনা এই লেস তৈরির কায়দা চালু হয়৷ ফলে শুধু পোশাক নয়, বাড়িঘর সাজানোর কাজেও তার ব্যবহার শুরু হয়৷ নেস্পুন বলেন, ‘‘লেসের নকশা অরগ্যানিক বলে আমার খুব ভালো লাগে৷ এগুলি গোল, তবে আসলে সম্পূর্ণ নিখুঁত গোলাকার নয়৷''
আজ নেস্পুন শিল্পকে তাঁর পেশা করেছেন এবং গোটা বিশ্বে তুলে ধরেছেন৷ যেমন ভারতের গোয়ায় জেলেদের এক নৌকায়৷ মুম্বই শহরের এক সেতুর উপর শোভা পাচ্ছে সেরামিক৷ ইউরোপেও নেস্পুন-এর চিহ্ন রয়েছে৷ যেমন ইটালির এক স্ট্রিট আর্ট উৎসবে৷ বিভিন্ন গ্যালারিতে তাঁর ইনস্টলেশন ৭০০ থেকে ২,০০০ ইউরো মূল্যে বিক্রি হয়৷ তবে নেস্পুন সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন খোলা রাস্তায় কাজ করতে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনিয়াকু গ্রামের পোলিশ নকশা বেছে নিয়েছি, কারণ ওয়ারশ শহরের জন্য দেশের কিছু থাকা ভালো ছিল৷''
প্রথমে তিনি নকশা মাটির উপর খোদাই করেন৷ খুঁটিনাটি পরিবর্তনগুলি ছোট যন্ত্র দিয়ে ঠিক করে নিতে হয়৷ ছোট সেরামিকের কাজ শেষ করতে প্রায় দু'ঘণ্টা সময় লাগে৷ দেওয়ালের উপর এই শিল্প আসলে বে-আইনি৷ কিন্তু পুলিশ তাঁকে নিরস্ত করলে নেস্পুন অন্য কোথাও কাজে হাত দেবেন৷