1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচন বাংলাদেশে পরিবর্তন আনতে পারে

গুই হাও/আরএস/এআই২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

নতুন একটি নির্বাচন বাংলাদেশে পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর সাংসদ ইওসেফ ভাইডেনহলৎসার৷ সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে এসে ডয়চে ভেলেকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/1EiBW
Bangladesh, Josef Weidenholzer beim Unterausschuss für Menschenrechte (DROI) Bangladesch
ছবি: EP

বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গত ১৬ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফর করে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক সাবকমিটি৷ এই কমিটি শুধু সরকার নয়, বিরোধী দলের সঙ্গেও আলোচনা করেছে৷

বাংলাদেশ সফরের সময় ঐ সাবকমিটিতে ছিলেন অস্ট্রিয়ার এমপি ইওসেফ ভাইডেনহলৎসার৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে সমঝোতা থেকে বহু দূরে রয়েছে৷ তবে সঠিক পথে যাওয়ার মতো অবস্থায় এখনো রয়েছে দেশটি৷

Kombobild Khaleda Zia und Sheikh Hasina
সাধারণ মানুষের মৃত্যুও টলাতে পারছে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়ার অবস্থানকেছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY

ডিডাব্লিউ: বাংলাদেশ সফর করে সেখানকার পরিস্থিতি কেমন মনে হলো আপনার?

ইওসেফ ভাইডেনহলৎসার: রাজপথে সংঘর্ষের খুব একটা প্রমাণ নেই৷ কিন্তু আপনি যদি ভিন্ন ভিন্ন মতের মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন – সরকারের প্রতিনিধি থেকে সাংবাদিক পর্যন্ত – তখন সংঘাতের গভীরতাটা ঠিকই উপলব্ধি করতে পারবেন৷

উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর যে কেউ বুঝতে পারবে যে, দলগুলোর মধ্যে মতৈক্যের কোনো একক রেখা নেই৷ নেই দু' পক্ষের মধ্যে সমন্বয়সাধনের পথ, কেননা কোনোপক্ষই ছাড় দিতে রাজি নয়৷ সরকার এবং বিরোধীপক্ষ উভয়েই আমাদের ভিডিও দেখিয়েছে, যেগুলোতে প্রাণঘাতি হামলার জন্য তারা একে অপরকে দায়ী করেছে৷ পরিস্থিতি অত্যন্ত নৈরাশ্যজনক বলে মনে হচ্ছে এবং এতে আমি সত্যিই খুব উদ্বিগ্ন৷

বর্তমান পরিস্থিতি শীঘ্রই ভালো হওয়ার কোনো ইঙ্গিত কি দেখা যাচ্ছে?

অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে আমি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অনেকগুলি ইতিবাচক দিক দেখতে পাই৷ অর্থনীতি ভালোভাবে চলছে৷ এছাড়া সেদেশে সংঘটিত দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো নিয়েও দেশটির মানুষের সচেতনতা বাড়ছে৷ সব মিলিয়ে ইতিবাচক দিকে অগ্রসর হওয়ার মতো বেশ কয়েকটি ভালো দিক দেশটির রয়েছে৷

তবে প্রতিষ্ঠিত অভিজাত শ্রেণি এই উন্নয়নের পথে এক ধরনের অন্তরায়৷ আমার মনে হয়, দেশটির শীর্ষ দুই নেত্রী বর্তমান বিসংগত পরিস্থিতি বা অচলায়তনের জন্য দায়ী৷

রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক উদ্যোগ তাহলে কীভাবে নেয়া যেতে পারে?

দেশটির প্রগতির জন্য আসলে একটি ‘কমপ্রিহেনসিভ কনসেপ্ট' বা ‘সমন্বিত পরিকল্পনা' প্রয়োজন৷ এ জন্য একটি সমন্বিত, অংশগ্রহণমূলক এবং গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন, যা জনগণকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেবে৷ আর একমাত্র সেটা করা হলেই বাংলাদেশ খুব তাড়াতাড়ি এই চলমান সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস৷

মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের সঙ্গে আলোচনার সময় উভয়পক্ষই ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্নের উত্তরের বদলে শুধু অতীতের বিভিন্ন ঘটনা টেনে এনেছে৷ আমার মনে হয়, গোটা রাজনৈতিক পরিকাঠামো এই দুই বড় নেত্রীর জন্য ভুগছে, যাঁরা কিনা অতীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা এবং পারিবারিক ইতিহাসের মধ্যেই নিজেদের আটকে রেখেছেন৷ এ জন্য একটা নতুন নির্বাচন বাংলাদেশে অত্যন্ত প্রয়োজন, যাতে তা রাজনীতিতে কিছু নতুন মুখ এবং নতুন মানুষ নিয়ে আসতে পারে৷ শুধুমাত্র তখনই পরিস্থিতিতে একটা পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে হয়৷

বাংলাদেশের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের মধ্যে সম্ভাব্য সমঝোতাকারী হিসেবে আজকাল ইউরোপের নাম উঠে আসছে৷ ইইউ কি সেজন্য প্রস্তুত?

বাংলাদেশের কিন্তু মধ্যস্থতাকারীর তেমন একটা দরকার নেই৷ তবে আমার মনে হয়, দেশটির বিদেশ থেকে চাপ প্রয়োজন৷ সেটা না হলে কাজ হবে না৷ আর এক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা, এই অঞ্চল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী৷

তাছাড়া সংঘাত পরিহার বা নিরসনে ইউরোপের একটা ঐতিহ্য রয়েছে৷ সেটা বিবেচনায় নিলে দু'পক্ষের মধ্যে সমঝোতা-সংলাপে আমরা যথার্থ মধ্যস্থতা করতে পারি৷ তবে উদ্যোগটি অবশ্যই বাংলাদেশের তরফ থেকে আসতে হবে৷

ইওসেফ ভাইডেনহলৎসার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপকমিটির একজন সদস্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান