1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান সসেজ, গ্রিক চিজ, ফরাসি শ্যাম্পেন

১১ জানুয়ারি ২০১৫

ইউরোপে এই নামগুলো শুধু দাদখানি চাল, মসুরির ডালই নয়, এগুলো রীতিমতো আইনগতভাবে সুরক্ষিত নাম৷ কাজেই ইইউ-মার্কিন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি টিটিপ-এ ব্যাপারটা একটা ইস্যু বৈকি৷

https://p.dw.com/p/1EHmm
Typisch Deutsch Brotmahlzeit
ছবি: Fotolia

ভুলটা করে ফেলেছিলেন জার্মানির কৃষিমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান স্মিট৷ তিনি একটি পত্রিকার সাক্ষাৎকারে বলে বসেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে ‘‘আমরা প্রতিটি বিশেষ ধরনের সসেজ বা চিজ-কে সুরক্ষা দিতে পারব না৷''

এই সুরক্ষা হলো এক ধরনের ট্রেডমার্ক৷ যে ওয়াইনে একটা ঝাঁঝালো, যেন সোডা মেশানো স্বাদ থাকে, তাকে স্পার্কলিং ওয়াইন বলা চলতে পারে, জার্মানিতে তাকে ‘জেক্ট' বলা হয়ে থাকে – কিন্তু শ্যাম্পেন বলে বিক্রি করার চেষ্টা করলেই বিপদ, যেহেতু ঐ নামটি ফ্রান্সের শ্যাম্পেন এলাকার স্পার্কলিং ওয়াইনের জন্য বরাদ্দ করা আছে৷

এভাবেই ইউরোপের মানুষ যুগযুগান্ত ধরে কিনে আসছে গ্রিসে তৈরি ‘‘ফেটা'' চিজ, কিংবা জার্মানির নুরেমব্যার্গের বিশেষ সসেজ৷ এত শুধু খাদ্য কি পানীয়ের বিশুদ্ধতাই নয়, এর পিছনে রয়েছে একটা গোটা মহাদেশের সংস্কৃতি৷ জার্মান কৃষিমন্ত্রী যখন সেই ইউরোপীয় লোকসংস্কৃতি ধরে টান দেন, তখন বোধহয় তিনি ঠিক আন্দাজ করতে পারেননি, ঠিক কত বড় ভীমরুলের চাকে তিনি ঢিল ছুঁড়ছেন৷

Weinkönigin Julia Bertram
ছবি: picture-alliance/dpa

একে তো ইউরোপের মানুষ মার্কিন মুলুকের বাসিন্দাদের চেয়ে অনেক বেশি ‘সবুজ', অর্থাৎ পরিবেশবাদী, অরগ্যানিক খাবারদাবারের ভক্ত, খানাপিনার ব্যাপারে একটু সনাতনপন্থিও বটে৷ তার উপর হালে যুক্ত হয়েছে জিএম, অর্থাৎ জেনেটিক্যালি মডিফায়েড বা জিন পরিবর্তিত খাদ্যপণ্যের ভীতি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য মানেই যে জিন পরিবর্তিত ভুট্টার দানা এবং ক্লোরিনে ধোওয়া মুর্গি, এটা ইউরোপীয়রা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন৷

এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে লাভ নেই: ইউরোপীয়রা ঠিক এভাবেই পরমাণু শক্তি কিংবা মৃত্যুদণ্ডের উপর বিরূপ৷ তা-ও তো সেগুলো কিছুটা তাত্ত্বিক ব্যাপার৷ কিন্তু ওয়াইন, মাংস, চিজ, এমন সব সুখাদ্য? সেগুলোরও কি এবার জাত থাকবে না? অ্যামেরিকার কেনটাকি থেকে আসবে খাস নুরেমব্যার্গের পর্ক সসেজ? ইটালির পার্মেসান চিজ তৈরি হবে মার্কিন গরুর দুধ থেকে?

এই ঊষ্মার অনেকটাই ব্যবসায়িক কারণে: খাদ্যপণ্যের ভৌগোলিক উৎস নির্দেশ করে দেওয়াটাও আসলে এক ধরনের ‘ব্র্যান্ডিং'৷ এখন মার্কিনিদের প্রশ্ন হলো: ডেনমার্ক যদি গ্রিক ফেটা চিজ তৈরি করে তা ইউরোপে বিক্রি করতে পারে, তাহলে মার্কিনিরাই বা পারবে না কেন? মার্কিন তরফে যুক্তি হলো: ফেটা চিজ, প্রসিউত্তো হ্যাম কিংবা ব্রাটউর্স্ট সসেজ – এগুলো হলো জেনেরিক বা সাধারণ নাম৷ ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আগত অভিবাসীরা বহুকাল ধরে এ সব সুখাদ্য বানিয়ে আসছেন – কাজেই তাদের সেই সব পণ্য রপ্তানি করতে দেওয়া হবে না কেন?

কিন্তু ব্যাপারটা যে অত সহজ হবে না, তার প্রমাণ: ইইউ-এর বাণিজ্য মুখপাত্র দানিয়েল রোজারিও এবার বলেছেন, ‘‘আমরা আমাদের মার্কিন সহযোগীদের কাছে পরিষ্কার করে দিয়েছি যে, ইউরোপে (খাদ্যপণ্যের) ভৌগোলিক পরিচিতি রক্ষা করাটা আমাদের একটা প্রাথমিক লক্ষ্য৷'' ইইউ সেই ‘সুরক্ষা' কমাতে সম্মত হয়নি এবং ভবিষ্যতেও সম্মত হবে না, বলে রোজারিও জানান৷

এসি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য