1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শার্লি এব্দো – উসকানি দেয়াটাই যাদের ঐতিহ্য

৮ জানুয়ারি ২০১৫

কাজ করতে করতেই কালাশনিকভে ঝাঁঝরা হলেন বিখ্যাত ফরাসি ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকা ‘শার্লি এব্দো'-র সাংবাদিকরা৷ কিন্তু কেন ‘শার্লি এব্দো' আবার সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য? কী তাদের কাজ? কেনই বা বার বার হামলার শিকার হচ্ছে তারা?

https://p.dw.com/p/1EGgM
Charlie Hebdo Satiremagazin Cover vom 7. Januar
ছবি: B. Guay/AFP/Getty Images

সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘শার্লি এব্দো'৷ তাই সপ্তাহের একটি দিন তাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷ সেই বিশেষ দিন, বুধবারকেই ‘টার্গেট' করেছিল সন্ত্রাসীরা৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মুখ ঢাকা ছিল, হাতে কালাশনিকভ ছাড়াও ছিল রকেট লঞ্চার৷ আল্লাহ-র নাম নিয়ে চিৎকার করতে করতে তারা বলেছিল: ‘‘পয়গম্বরের হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছি আমরা''৷

কী এমন ছাপিয়েছিল শার্লি এব্দো?

কোনো মুসলমান যদি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে কেমন হবে দেশের পরিস্থিতি? – এটাই হলো বিতর্কিত ফরাসি লেখক মিশেল উলেবেক-এর সাম্প্রতিকতম উপন্যাসের কাহিনি৷ আর সেটা যে স্যাটায়ারে ভরপুর একটা গল্প – তা বলাই বাহুল্য৷ এখন এই উলেবেককেই তাদের সর্বাধুনিক সংস্করণের প্রচ্ছদ হিসেবে বেছে নিয়েছিল বাম ভাবধারায় বিশ্বাসী পত্রিকাটি৷ আর তাতেই যত সমস্যা!

এটা অবশ্য প্রথম নয়৷ এর আগেও বহুবার হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ছেপেছে শার্লি এব্দো এবং সে'জন্য একাধিকবার হুমকির মুখেও পড়েছে তারা৷ ২০০৬ সালে ডেনমার্কের ‘‘ইলান্ড্স পোস্টেন'' পত্রিকায় হজরত মোহাম্মদের যে সব ব্যঙ্গচিত্র বেরিয়েছিল, তা সে সময়েই ছাপিয়েছিল ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত ফরাসি এই ব্যঙ্গ-পত্রিকা৷

Frankreich Presse Brandanschag gegen Charlie Hebdo in Paris Flash-Galerie
ছবি: picture-alliance/abaca

বলা বাহুল্য, সেই ব্যঙ্গচিত্রগুলো গোটা বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ ও উষ্মার সৃষ্টি করে৷ চলে বিক্ষোভ, বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত দেশে ডেনমার্ক ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের দূতাবাসের ওপর হামলা৷ এমনকি ২০১১ সালে প্যারিসে শার্লি এব্দো-র দপ্তরে বোমাও ছোঁড়া হয়৷ তা সত্ত্বেও কিন্তু পত্রিকাটি হজরত মোহাম্মদ এবং ইসলামকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক রচনা ও ছবি ছাপানো বন্ধ করেনি: বিশেষ করে তাদের ‘‘শরিয়া'' সংস্করণটিতে সম্পাদকের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘‘প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ''৷

ইসলামবিরোধী না বাকস্বাধীনতার সপক্ষে?

মুসলমান, অমুসলমান অনেকের কাছেই এ ধরণের লেখা ইসলামবিরোধী মনে হতে পারে৷ অনেকে হয়ত ব্যঙ্গাত্মক লেখার রসাস্বাদনে পটু নন, সক্ষমও নন৷ তবে এ পত্রিকাটি কিন্তু বরাবরই ধর্ম, সাধু-সন্ত, ঈশ্বর-আল্লাহকে নিয়ে রসিকতা করে আসছে, দিচ্ছে উসকানি৷ কারণ এখানেই স্যাটায়ারের মজা, এটাই যে তাদের ঐতিহ্য৷ অবশ্য শুধু ইসলাম নিয়ে কটাক্ষ নয়, একাধিকবার পোপকে নিয়েও ঠাট্টা-মশকরা করেছে শার্লি এব্দো, ক্যাথলিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়েছে বিরোধে৷ কিন্তু প্রতিবারই মামলায় জিতেছে তারা৷ ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা পোপকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টায় রুষ্ট হতে পারেন, কিন্তু শেষমেষ সেটা তাঁরা মেনে নেন৷ মুক্ত, গণতান্ত্রিক সমাজ এবং সরকারও এর বিপক্ষে যেতে পারে না৷ কিন্তু এবার একটা অনুরূপ ‘অপরাধের' জন্যই প্রাণ হারালেন শার্লি এব্দো-র প্রধান সম্পাদক স্টেফান শাবনিয়ের এবং জর্জে ভলিনস্কি, বের্বা ভের্লাক ও জঁ কাবু'র মতো প্রতিভাধর কার্টুনিস্ট৷

আর তাই শার্লি এব্দো-র পত্রিকা অফিসে হামলার ধিক্কার জানিয়েছে, জানাচ্ছে অগুন্তি মানুষ৷ ফরাসি হ্যাশট্যাগ ‘‘#জেসুইশার্লি', অর্থাৎ ‘আইঅ্যামশার্লি' ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে৷

ফ্রান্সের বেন পোয়েল লিখেছেন, ‘‘বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের নিস্তব্ধ করা যায়নি৷''

ফ্রান্সের ‘শার্লি এব্দো' অনেকটা জার্মানির অন্যতম স্যাটায়ার পত্রিকা ‘টিটানিক'-এর মতো৷ তাই জার্মানিও দাঁড়িয়েছে তার পাশে৷ আইনজীবী এবং সাংবাদিক ডানিয়েল মার্টিনসন #এব্দো ব্যবহার করে যুক্তিসঙ্গত কারণেই লিখেছেন, ‘‘বাকস্বাধীনতা, স্যাটায়ার এবং মুক্ত সমাজের জন্য এ ছিল একটা কালো দিন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য