1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘গার্মেন্টসে নিরাপত্তাহীন নারী শ্রমিক’

সমীর কুমার দে২৯ জুন ২০১৪

গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করতে গিয়ে ৩০ ভাগ নারী শ্রমিক নিরাপত্তাহীনতায় ভু্গছেন৷ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার কারণেই তাদের এই শঙ্কা৷ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গার্মেন্টস কারখানায় নারী শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1CRzr
Erster Jahrestag des Einsturzes der Textilfabrik in Bangladesch (Bildergalerie)
ছবি: DW/C. Meyer

ওই গবেষণায় এমন চিত্র ফুটে উঠেছে৷ তবে গার্মেন্টস মালিকরা নারী শ্রমিকদের এই শঙ্কার সঙ্গে একমত নন৷ তারা মনে করেন, গার্মেন্টসে কাজ করা শ্রমিকদের ৯৮ ভাগই নারী৷ সেখানে তাদের নিরাপত্তাহীন মনে করার কোন কারণ নেই৷ তাছাড়া কর্মকর্তারা সবসময়ই কারখানা তদারকি করেন৷

মহিলা পরিষদের ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ৭৬ ভাগ নারী শ্রমিকই মনে করেন তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নেই৷ তাদের আশংকা যে কোন সময় তারা কাজ হারাতে পারেন৷ অন্যদিকে মালিকদের পক্ষ থেকে নতুন ন্যূনতম মজুরি শতভাগ বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও প্রায় ৪০ শতাংশ নারী শ্রমিক ন্যূনতম মজুরি পাননি বলে জানিয়েছেন৷ অবশ্য শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে অসন্তুষ্টি আগের তুলনায় কমছে৷ এখন দুই-তৃতীয়াংশ নারী শ্রমিক তাদের মজুরি নিয়ে সন্তুষ্ট৷

তৈরী পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমই'র সহসভাপতি আনোয়ারুল আজিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘কারখানায় যেখানে ৯৮ ভাগ নারী শ্রমিক কাজ করেন সেখানে তারা নিরাপত্তাহীনতায় কেন ভুগবেন? তাদের কোন অভিযোগ থাকলে তা কর্মকর্তাদের কাছে বলার সুযোগও রয়েছে৷' তাঁর মতে অনেক গবেষণা হয় কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন৷ তিনি বলেন, ‘ওই গবেষণায় বলা হয়েছে শতকরা ৮ ভাগ নারী শ্রমিকের বয়স ১৮ বছরের নীচে৷ আসলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সবগুলো গার্মেন্টসে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, একটি গার্মেন্টসে মাত্র একজন নারী শ্রমিক পাওয়া গেছে যার বয়স ১৮ বছরের কম৷ তাও সে তার মায়ের সঙ্গে ফ্যাক্টরিতে কাজ করে৷ এরকম দু'একটি ক্ষেত্রে হতে পারে৷ কিন্তু প্রশ্ন হল তারা ৮ শতাংশ কোথায় পেলেন আমরা বুঝতে পারি না৷'

শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে মহিলা পরিষদ৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সামিনা লুত্‍ফা ও ড. জাহিদ চৌধুরী এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন৷ সেখানে বলা হয়, গত বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র সদস্য এমন ১২টি কারখানার ১,০১৩ জন নারীর উপর এই জরিপ চালানো হয়েছে৷ জরিপে অংশগ্রহণকারী ৮৭ শতাংশ নারী শ্রমিকের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি৷ জরিপে দেখা গেছে ৯৬ শতাংশ নারী শ্রমিকই ভাগাভাগি করে টয়লেট, গোসলখানা ও রান্নাঘর ব্যবহার করেন৷ এর মধ্যে প্রতি ২২ জন মিলে একটি টয়লেট ব্যবহার করেন৷

প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর বিজিএমইএ'র সাবেক সভাপতি আনোয়ার উল-আলম চৌধুরী পারভেজ শিশু শ্রমসহ প্রতিবেদনের কয়েকটি বিষয়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন৷ তিনি বলেন, ‘শিশুশ্রম নিরসনে ১৯৯৫ সাল থেকেই বিজিএমইএ চুক্তিবদ্ধ৷ কোন কারখানার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এলে বিজিএমইএ থেকে সদস্যপদ চলে যাবে৷'

তবে প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর ওই আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে গার্মেন্টস মালিকদের করছাড়সহ যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়, তার কতটুকু শ্রমিকদের জন্য ব্যয় হচ্ছে?' তিনি বলেন, ‘সরকার ও বিজিএমইএ'র উদ্যোগে গার্মেন্টস খাতের শ্রমিকের সংখ্যাসহ কয়েকটি বিষয়ের জন্য একটি সঠিক জরিপ করা দরকার৷' সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ছাড় দেয়া শুল্কের একটি অংশ, কারখানার কমপ্লায়েন্স তহবিল বাবদ একটি অংশ এবং ক্রেতার কাছ থেকেও শ্রমিকের কল্যাণে একটি অংশ আদায় করার উপায় বের করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান ড. বিনায়ক সেন৷

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ শ্রমিকদের পাশাপাশি মালিকদের নিয়েও একটি গবেষণা জরিপ চালানোর আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, ‘মালিকরা কত টাকা আয় করেন, তাদের ওই টাকা কোথায় কোথায় যায় তা নিয়েও একটি জরিপ হওয়া দরকার৷ সুইস ব্যাংক, কানাডা, মালয়েশিয়াসহ কোথায় কত টাকা যাচ্ছে তারও হিসাব আসা দরকার৷' এছাড়া গ্যাস, বিদ্যুত্‍, জমি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, স্বল্প সুদে ঋণ এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য