1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির শুল্ক মিউজিয়াম

মার্ক ফন ল্যুপকে/আরবি৬ আগস্ট ২০১৩

গ্রীষ্মের ছুটিতে জার্মানির লাখ লাখ মানুষ বেড়াতে বের হন দেশ-বিদেশে৷ দেশে ফেরার সময় সীমান্তে দেখা হয় শুল্ক কর্মীদের সঙ্গে৷ তবে এই সব কর্মী শুধু ভ্রমণকারীদের মালপত্র নিয়ন্ত্রণই করেন না, তাঁদের আরো অনেক কাজকর্ম করতে হয়৷

https://p.dw.com/p/19K15
Die Bilder zeigen das deutsche Zollmuseum in Hamburg, aufgenommen von mir am 24.07.13. DW/Marc v. Lüpke
ছবি: DW/M.v. Lüpke

শুল্ক বিভাগের অনেক দায়িত্ব

অন্যরা যখন ছুটির আনন্দে ভরপুর, তখন কাজ শুরু হয় শুল্ক কর্মীদের৷ বিদেশ থেকে আসা মানুষরা শুল্কযোগ্য বা অবৈধ কোনো সামগ্রী এনেছেন কিনা, সেটা তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন৷ ‘‘আপনার কাছে কি শুল্কযোগ্য কোনো কিছু আছে?'' এই প্রশ্নটা অনেক পর্যটকের কাছেই পরিচিত৷

তবে জার্মান শুল্ক বিভাগকে আরো অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়৷ এগিয়ে আসতে হয় অবৈধ কাজ প্রতিরোধে৷ যেমন কোনো প্রতিষ্ঠান আয়কর প্রদর্শন না করে কর্মী নিয়োগ দিলে৷ এছাড়া মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনেও সক্রিয় হতে হয় এই প্রতিষ্ঠানকে৷

Deutsches Zollmuseum Hamburg
প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে শুল্ক সংক্রান্ত কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসছবি: DW/M.v. Lüpke

হামবুর্গ শহরে জার্মান শুল্ক মিউজিয়াম শুল্ক কর্মীদের কাজকর্ম কাছে থেকে দেখার একটা সুযোগ করে দিয়েছে৷ প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে শুল্ক সংক্রান্ত কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস৷ এখানে এসে দর্শকরা প্রয়োজনীয় কিছু পরামর্শ পেতে পারেন৷ অস্বস্তিকর অবস্থার হাত থেকে রক্ষাও পেতে পারেন৷

সুটকেসে সুন্দর সুন্দর ‘স্যুভেনি'-র ভরে বিদেশ থেকে আসেন অনেকে, যেমন ব্রেসলেট, প্রবাল বা নতুন বেল্ট৷ কিন্তু অনেক সময় এই খুশিটা এক মুহূর্তে নিভে যায় শুল্ককর্মীদের কাছে এলে৷

হুমকির মুখে পড়া জীবজন্তু ও উদ্ভিদ রক্ষা

জার্মান শুল্ক বিভাগ হুমকির মুখে পড়া জীবজন্তু ও উদ্ভিদ রক্ষার ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ৷ তাই সাধারণ একটি বেল্টও হঠাৎ চড়ামূল্যের হয়ে যেতে পারে, যদি সেটি কোনো সংরক্ষিত জাতের কুমিরের চামড়ার হয়ে থাকে৷ সেটা বাজেয়াপ্ত তো করা হবেই, জরিমানাও হতে পারে৷ জানান শুল্ক মিউজিয়ামের লুটৎস হানেমান৷ তাই পর্যটকদের চর্ম বা উদ্ভিদজাত কোনো কিছু কিনতে হলে এ ব্যাপারে ভালো করে লক্ষ্য রাখা উচিত৷

শুধু তাই নয়, বিদেশ থেকে দামি কোম্পানির নকল করা জিনিস কেনার প্রবণতাও দেখা যায় অনেক ভ্রমণকারীর মধ্যে৷ অবশ্য না জেনেও প্রতারণার ফাঁদে পা দেন অনেকে৷ হামবুর্গের শুল্ক জাদুঘরে এই রকম বহু দৃষ্টান্ত প্রদর্শিত হয়েছে৷ যেমন আকাশছোঁয়া মূল্যের স্পোর্টস-এর জুতা অনেক দেশে পাওয়া যায় পানির দরে৷ নকল ধরা পড়লে আবার যেন আকাশ থেকেই পড়েন অনেকে৷ মুহূর্তেই আনন্দ হয়ে যায় মাটি৷

এইরকমভাবে বহু দামি কোম্পানির হাত ব্যাগ, খেলনা ও আরো অনেক কিছু নকল করে সস্তায় বিক্রি করা হয় বহু দেশে৷ ‘‘এত কম দাম দেখে মাথা গুলিয়ে যায় অনেকের৷ কিন্তু এই খোশ মেজাজ বেশিক্ষণ টিকে থাকে না৷ শুল্ককর্মীরা ধরে ফেলতে পারেন নকলটা'', জানান হানেমান৷ জিনিসটি বাজেয়াপ্ত করে ফেলেন তাঁরা৷ সেই সাথে জরিমানার ধাক্কাও সামলাতে হয় পর্যটকদের৷ বেআইনিভাবে কোনো জীবজন্তু নিয়ে এলেও ক্ষতিপূরণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না৷

Deutsches Zollmuseum Hamburg
শুল্ককর ফাঁকি দেওয়ার জন্য এরকম গাড়ি ব্যবহার করা হয়ে থাকেছবি: DW/M.v. Lüpke

অর্থনীতি ও ক্রেতাদের স্বার্থেই

শেষ পর্যন্ত অর্থনীতি ও ক্রেতাদের স্বার্থেই কাজে লাগে এই ধরনের পদক্ষেপ৷ শুল্ক বিভাগের অনুমান, বিশ্ব বাণিজ্যের আট শতাংশই দখল করে আছে নকল পণ্যের বাজার৷ যা আসল প্রস্তুককারীদের জন্য বিশাল ক্ষতির কারণ৷ এইসব জিনিস সস্তায় তৈরি হয়, স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর৷ বিশেষ করে ওষুধপত্র ও খাদ্যদ্রব্যের বেলায় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত৷ নকল ব্রান্ডি থেকে তো বিষক্রিয়াও হতে পারে৷ সতর্ক করে বলেন হানেমান৷

শুল্ক জাদুঘরটি ঘুরে ফিরে দেখে সাধারণ মানুষ হাল্কা বোধ করতে পারে৷ দেখেশুনে জিনিস কিনলে শুল্ক নিয়ন্ত্রণের ঝামেলায় পড়তে হয় না৷ অবশ্য অপরাধ প্রবণতা থাকলে বিষয়টি অন্যরকম৷ যেমন অস্ত্রশস্ত্র, মাদক দ্রব্য ও সিগারেট চোরাচালান করলে৷ গাড়ির একটি খোলস রেখে দেখানো হয়েছে চোরাচালানকারীদের অভিনব সব আইডিয়া৷ গাড়ির বিভিন্ন জায়গায় যেমন সিটের নীচে বা ইঞ্জিনের পেছনে সিগারেট, টাকা-পয়সা, মাদক দ্রব্য ইত্যাদি লুকিয়ে রেখে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করে তারা৷ এক্ষেত্রে খেলাধুলার সাজ সরঞ্জামও বাদ যায় না৷ গলফ খেলার বলে কোকেন লুকিয়ে রাখার ঘটনাও ঘটেছে৷ এদিক দিয়ে মাথা খাটাতে ওস্তাদ এই সব অপরাধীরা৷ এই ধরনের দৃষ্টান্ত দেখা যাবে হামবুর্গের শুল্ক মিউজিয়ামটিতে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য