কলকাতায় একুশের শহীদ স্মরণ
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩এমন আড়ম্বরের সঙ্গে একুশে ফেব্রুয়ারির মাতৃভাষা পালন কলকাতায় সম্ভবত আগে কখনও হয়নি৷ আজকের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সাংসদ, তখন তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে বাংলা ভাষা শহীদদের একটি স্মারক তৈরি হয়েছিল৷ পরপর সাজিয়ে রাখা বইয়ের আদলে গড়া রক্তলাল সেই স্মারকে খোদাই করা আছে ভাষা শহীদদের সবার নাম৷
সেই শহীদ স্মারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একুশের বিকেলে শুরু হল উদযাপন৷ বাঙালির শিল্প-সাহিত্য-সংগীতের প্রতিনিধি যাঁরা, সংগীতশিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র, বনশ্রী সেনগুপ্ত, প্রতুল মুখোপাধ্যায়, কবি জয় গোস্বামী, নাট্যকর্মী বিভাস চক্রবর্তী, সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, সাহিত্যিক-সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবী-সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে৷ আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো ছিলেনই৷ তিনি বললেন, ‘‘ভাবতে অবাক লাগে যে একটা ভাষা আন্দোলন কীভাবে একটা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপান্তরিত হয়েছিল৷ ইতিহাসে এমন নজির দুটি নেই৷ এবং মাতৃভাষা দিবস মানে সকলের মাতৃভাষা৷ বিশ্বের যেখানে যিনি যে ভাষায় কথা বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি তাদের সবার উদযাপনের দিন৷''
১১টি বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের ডাকা দেশজোড়া ধর্মঘটের এদিনই ছিল দ্বিতীয় দিন৷ কিন্তু রাজ্যের বাম নেতাদের উপরোধে, পশ্চিমবঙ্গে পরিবহণ ব্যবস্থাকে বনধের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, যাতে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষ যোগ দিতে যেতে পারেন৷ যদিও এদিন কলকাতা-সহ সারা রাজ্যে সকাল থেকেই জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক৷ সরকারি অনুষ্ঠানটি-সহ সারা রাজ্যেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে ভাষা দিবস পালিত হয়েছে, শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে ভাষা শহীদদের৷ নাচে-গানে-নাটকে আবৃত্তিতে একটি ভাষারই জয়গান ধ্বনিত হয়েছে মাঠে-প্রান্তরে৷