বার্লিনেও দীপাবলি, তবে অন্য মেজাজে
১২ অক্টোবর ২০১১বার্লিন স্থাপত্যের শহর, ইতিহাসের শহর, উৎসবের শহর৷ দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা ভুলে উৎসবে মেতে উঠতে জানেন এই শহরের মানুষ৷ কোষাগারের বেহাল অবস্থা সত্ত্বেও ক'দিন আগেই শহরের মানুষ তৃতীয় বারের মতো ক্ষমতায় ফেরালেন আমুদে মেয়র ক্লাউস ভোভেরাইট'কে৷
অতএব আবার উৎসব৷ বুধবার রাতে শহরের প্রাসাদ, মিউজিয়াম, স্মৃতিসৌধ সহ সব স্থাপত্য সেজে উঠছে আলোর সাজে৷ নানা রঙের আলো, নানা আকারের আলো৷ শুধু স্থাপত্যকলার মহিমা তুলে ধরতে গোটা বিশ্বে এত বড় আকারের আলোর উৎসব সহজে দেখা যায় না৷ সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে পটসডামার প্লাৎস থেকে শুরু হবে এই আলোর বন্যা৷ এই নিয়ে পর পর ৭ বছর ধরে চলছে আলোর এই উৎসব৷ হেমন্তের সময় গোধূলি লগ্নে বার্লিনের আকাশে এমনিতেই অপূর্ব আলোর ছটা দেখা যায়৷ তারই সম্পূরক হিসেবে যোগ হয় মানুষের তৈরি এই আলোর ছটা৷ বার্লিনে থাকলে আলোর এই উৎসব এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই৷ চলছে শহরের বিখ্যাত রাস্তা ‘কুদাম'-এর ১২৫ বছর পূর্তি উৎসব৷ এই উৎসবের আয়োজকরাও বিশেষ আলোর ব্যবস্থা করছেন৷
বিশাল অঙ্কের ব্যয় করে এমন উৎসব করার সপক্ষে কোনো যুক্তি রয়েছে কি? নিন্দুকদের এই সমালোচনার জবাবে আয়োজকরা বলেন, এই উৎসব দেখতে লক্ষ-লক্ষ পর্যটকের ঢল নামে৷ গোটা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমের বাড়তি আগ্রহ বার্লিনের উজ্জ্বল ভাবমূর্তির জন্য জরুরি বটে৷ শুধু গত বছরই প্রায় ১০ লক্ষ পর্যটক এসেছিলেন এই উৎসব দেখতে৷ হোটেলগুলিতে ৪২৫,০০০ বাড়তি বুকিং হয়েছিল৷ তাছাড়া আকাশে আলোর ছটা দেখতে পয়সাও লাগে না৷
কে বলবে, ২২ বছর আগেও এই বার্লিন শহর ছিল বিভক্ত – শীতল যুদ্ধের লৌহ যবনিকার সীমানা৷ আজকের জমজমাট পটসডামার প্লাৎস যে আলোর উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু, মাত্র ১০ বছর আগেও সেখানে ছিল ধু ধু প্রান্তর৷ বার্লিন থেমে থাকে না, সব সমস্যা, সংকট অগ্রাহ্য করে এগিয়ে চলে৷ আলোর উৎসবও যেন সেই ‘স্পিরিট'এর আরেকটা পরিচয়৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ