সাগর-রুনি হত্যা মামলা
৫ মার্চ ২০১৪
আটককৃতরা জামিন চাওয়ায় হাইকোর্টের তলবে বুধবার সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলায় ব়্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে হাজির হন৷ বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চ মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য না শুনে ‘জামিন শুনানির এখতিয়ার আছে' – এমন বেঞ্চ বা প্রধান বিচারপতির কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করতে বলেন৷
এ সময় আসামিপক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন এসএম মাসুদ হোসেন দোলন৷ অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট গাজী মো. মামুনুর রশীদ৷
সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ব়্যাবের সিনিয়র এএসপি মো. জাফর উল্লাহও নথিপত্র নিয়ে আদালতে হাজির ছিলেন৷ কিন্তু মামলার তদন্তে নতুন কোনো অগ্রগতির খবর তিনি দিতে পারেননি সাংবাদিকদের৷ আসামিদের আইনজীবী মাসুদ হোসেন দোলন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা প্রধান বিচারপতির কাছে যাব৷ তিনি যদি এই বেঞ্চে আসতে বলেন, তাহলে এই বেঞ্চেই শুনানি করব৷''
২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি ভোররাতে ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি৷ হত্যার রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাইকোর্টের নির্দেশেই ২০১২ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি মামলাটি পুলিশ থেকে ব়্যাবে স্থানান্তর করা হয়৷
ব়্যাব তদন্তের দায়িত্ব নেয়ার পর সন্দেহভাজন ১৬ জনের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়৷ এছাড়া আলামত হিসেবে জব্দকৃত ছুরি ও পোশাকের নমুনাও পাঠানো হয়৷ কিন্তু তাতেও হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি৷
হত্যাকাণ্ডের এক বছর আট মাস পর ঘটনায় ‘জড়িত' আটজনকে চিহ্নিত করে সাতজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দিন খান আলমগীর৷ এর মধ্যে পাঁচজনই আবার চিকিত্সক নেতা ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই হত্যা মামলার আসামি৷ আটকদের মধ্যে বকুল মিয়া, রফিকুল ইসলাম ও কামরুল হাসান অরুণ নামে তিনজনের পক্ষে জামিনের আবেদন নিয়ে গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে যান তাঁদের আইনজীবী এস এম মাসুদ হোসেন দোলন৷
শুনানিতে তিনি বলেন, দু'বছর পেরিয়ে গেলেও এ মামলায় অভিযোগ-পত্র হয়নি৷ মামলার অগ্রগতি না হওয়ার পরও আসামিদের আটকে রাখা হয়েছে৷ তাঁদের জামিন দেয়া হোক৷ এরপর বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর বেঞ্চ জামিন শুনানির আগে তদন্তের অগ্রগতি জানতে চান এবং এ জন্য ব়্যাবের তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন৷
সে অনুযায়ী, এএসপি জাফর উল্লাহ বুধবার সকালে আদালতে উপস্থিত হলেও মামলার নথি আসতে দেরি হওয়ায় শুনানি পিছিয়ে দুপুরে সময় রাখা হয়৷ আর তলবকারী বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব পাওয়ায় বিষয়টি শুনানির জন্য তোলা হয় বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চে৷
ওদিকে রুনির ভাই নওশের রোমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ব়্যাব তাঁদেরও মামলার তদন্ত নিয়ে কিছু জানাচ্ছে না৷ এমনকি জানতে চাইলেও তারা এড়িয়ে যাচ্ছে৷ বলতে গেলে গত এক বছর ধরে তাঁরাও এই মামলার তদন্ত নিয়ে অন্ধকারে আছেন৷