1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতিদিনই নেশায় আসক্ত হচ্ছে মানুষ

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১০

মাদক – এ এক ভয়াবহ সমস্যা প্রতিটি দেশের জন্যে৷ বাংলাদেশেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাদকাসক্তের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে৷ হেরোইন, গাঁজা এবং ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন নেশায় প্রতিদিনই আসক্ত হচ্ছে মানুষ৷

https://p.dw.com/p/PPU4
আয়নায় দেখে কপালে হেরোইন ফুঁড়ছে এক নেশাখোরছবি: AP

বয়স তাদের ১৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে, তবে তার মানে এই নয় যে এই বয়সের বাইরে আর নেশা ছড়াচ্ছে না৷ ছড়াচ্ছে, তাও ছড়াচ্ছে৷ তবে এই বয়সিরাই আসক্ত হচ্ছে বেশি৷ বাংলাদেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা এতো বেশি বাড়ছে যে,জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে৷

Spritze im Fuß
হেরোইনের কবলে আরেকজনছবি: AP

হাসপাতালগুলোতে আসা রোগীদের মধ্যে প্রায় ১২ ভাগ রোগী মাদকাসক্ত৷ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নেশা করছেন৷ আর নেশা আসক্তদের মধ্যে সব পেশারই মানুষ আছেন৷ ছাত্র, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে অন্য যে কোন পেশার মানুষকেই নেশায় আসক্ত হতে দেখা যাচ্ছে৷ তবে এই কথা সত্যি, যে মাদকাসক্তদের বেশিরভাগই ছাত্র-ছাত্রী৷ আর মাদকের কারণে শিক্ষার মান নীচে নেমে যাচ্ছে৷ অনেক সময়ে ছেলেমেয়েরা মাদকাসক্ত হয়ে স্কুল-কলেজে যাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে৷ আর শেষ পর্যন্ত মাদক সংগ্রহের জন্যে এই মাদকাসক্তরা জড়িয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে৷ মাদক সংগ্রহের জন্যে তারা তাদের সর্ব শক্তি নিয়োগ করছে৷ এই মাদক তাদেরকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে যে, তারা মাদক না পেলে মানসিক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ হারিয়ে ফেলে জীবনযাপন এবং কাজের স্পৃহা৷ অর্থাৎ মাদকই তাদের মানসিক এবং শারীরিক নির্ভরতার পরিচালক হয়ে দাঁড়ায়৷

এই নেশা থেকে বের হয়ে আসা এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসা নিয়ে কথা হচ্ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা.আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে৷ তিনি মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সম্পর্কে বললেন, ‘‘সাধারনত তিনটি ধাপে চিকিৎসা করা হয়৷ প্রথম ধাপটি হচ্ছে মোটিভেশন বা উদ্বুদ্ধকরণ৷ দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে, তার শরীরে যে বিষাক্ত পদার্থটি আছে, সেটি বের করার জন্যে মাদক বিমুক্তকরণ৷ এবং তৃতীয় ধাপটি হচ্ছে তাকে সামাজিকভাবে পূনর্বাসন করা৷'' তৃতীয় ধাপটিকে তিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে অভিহিত করেছেন৷

কিন্তু এই ভয়াবহ নেশায় আসক্ত হবার পেছনের কারণটি আসলে কী? বলা যায়, প্রথম কারণ কৌতূহল এবং উত্তেজনা৷ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হতাশা বা অবসাদ মাদকে আসক্ত হবার আরেকটি বড় কারণ৷ আর কেউ কেউ আসক্ত হয় মাদক সম্পর্কিত পশ্চিমা সংস্কৃতি এবং জীবনকে উপভোগের ধরণ অনুসরণ করতে গিয়ে৷ আর এই কথা সত্যি যে বাংলাদেশের মাদকাসক্তরা দেশের আইনকে যতোটা না ভয় পায় তারচেয়ে বেশি ভয় পায় সামাজিক কলঙ্ককে৷

ডা.আব্দুল্লাহ আল মামুন আরো বললেন, ‘‘শরীর থেকে যেকোন মাদক বের করতে রোগীকে দুই থেকে চার সপ্তাহ হাসপাতালে রাখতে হয়৷ কেননা এই সময় তার শরীরে কিছু প্রতিক্রিয়া হয়৷ এবং এই নির্ধারিত সময়ের পরে তার শরীরে আর মাদক থাকে না৷ এবং শারিরীকভাবে সে আর মাদকের ওপরও নির্ভরশীল থাকে না৷ কিন্তু মানসিক যে টান, একবার খাওয়ার যে ইচ্ছা, সেটা কিন্তু এতো সহজে যায় না৷ আর এটির জন্যেই সবচেয়ে জরুরী কাজটি হচ্ছে তাকে পূনর্বাসন করা এবং মানসিক সাপোর্টের জন্যে তাকে নিয়মিত সেশনে নিয়ে আসা৷''

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন