1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাৎসি শিবিরের রক্ষী

১৭ মার্চ ২০১২

গত মে মাসে মিউনিখের একটি আদালত জন দেমিয়ানুক’কে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে৷ আপীল চলার সময় ৯১ বছর বয়সী দেমিয়ানুক’কে একটি প্রবীণাবাসে রাখা হয়েছিল৷

https://p.dw.com/p/14MAu
ছবি: picture-alliance/dpa

নাৎসি আমল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে বহুদিন৷ কিন্তু ইতিহাস যে কাউকে ক্ষমা করে না, তারই প্রমাণ হিসেবে যেন দেমিয়ানুকের মতো অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি হয়ে থাকে৷ ৯১ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের পরলোকগমনটা বড় কথা নয়৷ কিন্তু অধিকৃত পোল্যান্ডে নাৎসিদের সোবিবোর বন্দীশিবিরে ২৭,৯০০ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে৷ সালটা ১৯৪৩৷ দেমিয়ানুক সে'সময় ছিলেন ঐ শিবিরের রক্ষীদের একজন৷ তিনি যে কোনো বন্দীর উপর নিপীড়ন করেছেন অথবা কোনো বন্দীকে হত্যা করেছেন, তার কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য-প্রমাণ ছিল না৷ তা সত্ত্বেও মিউনিখের আদালত তাকে মৃত্যুযজ্ঞের সহযোগী হিসেবে অপরাধী নির্দিষ্ট করে এবং সাজা দেয়৷ দেমিয়ানুক মামলার অভিনবত্ব ছিল সেখানেই৷

Demjanjuk in Pflegeheim am Alpenrand
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এখানেই বসবাস করেছেন দেমিয়ানুকছবি: picture alliance / dpa

দেমিয়ানুকের জন্ম ইউক্রেইনে৷ সোবিবোরের পর দেমিয়ানুক জার্মানির ফ্লসেনবুর্গ বন্দীশিবিরেও এক বছরের বেশি সময় কাজ করেছেন৷ সেই সময় ফ্লসেনবুর্গে প্রাণ হারান প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ - রোগে কিংবা অনশনে, অথবা নির্বিচার হত্যায়৷ সোবিবোর ছিল সরাসরি মৃত্যুশিবির৷ ফ্লসেনবুর্গ ছিল যাকে বলা হতো শ্রমশিবির৷ সে শ্রমশিবিরে বন্দীদের ক্রীতদাসের মতো শুধু বাঁচিয়ে রাখা হতো - তাও যতোক্ষণ পর্যন্ত তারা চরম ক্লান্তি, মহামারী, ক্ষুধা এবং অমানুষিক সাজার সঙ্গে যুঝতে না পেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত৷

Polen Vernichtungslager Sobibor bei Lublin Denkmal
সোবিবেরে লুবলিন স্মৃতিসৌধছবি: picture-alliance/dpa

সেই বন্দীশিবিরের কর্মী দেমিয়ানুক যুদ্ধের পর বছর ছয়েক জার্মানিতেই থাকেন৷ তারপর স্বদেশে ফিরতে অপারগ ‘‘উদ্বাস্তু'' হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাবার অনুমতি পান৷ সেখানে ওহাইও'তে একটি গাড়ি তৈরীর কারখানাতে কাজ করতেন দেমিয়ানুক৷ ১৯৮৬ সালে তাকে ইসরায়েলে পাঠানো হয় বিচারের জন্য এবং সেখানে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়৷ কিন্তু ইসরায়েলের সর্বোচ্চ আদালত সেই রায় বাতিল করায় আবার ওহাইও'তে ফেরেন দেমিয়ানুক৷ অতঃপর যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে তার বিরুদ্ধে মামলা আনা হয় এবং ২০০৯ সালে তাকে জার্মানিতে বহিষ্কার করা হয়৷

১৮ মাস বিচার প্রক্রিয়ার পর পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন দেমিয়ানুক, যে দণ্ড তাকে আর ভোগ করতে হল না৷ তবে এ'কাহিনি যে সভ্যতা তাকে দণ্ড দিয়েছে, সেই সভ্যতার মনুষ্যত্ব প্রমাণ করে বৈকি৷ কেননা সোবিবোর, ফ্লসেনবুর্গে সভ্যতা ও মনুষ্যত্বের অন্ত ঘটেনি৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: মারিনা জোয়ারদার

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য