1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নগ্নতা নিয়ে ছবি এঁকে জনপ্রিয়

১০ জুলাই ২০১৬

পাকিস্তানে যেখানে ‘অনার কিলিং' বা সুফিজমের মতো মতবাদের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনা ঘটছে, সেখানেই এক শিল্পী নির্দিধায় চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর শিল্পকর্ম৷ তাও আবার বিষয়বস্তু নগ্নতা হওয়া সত্ত্বেও৷ শিল্পীর নাম – মোহাম্মদ আলী৷

https://p.dw.com/p/1JJy2
নগ্ন নারীর তেলচিত্র
ছবি: Detail/U. Edelmann - Städel Museum - ARTOTHEK/Bildrecht, Wien, 2015

২৭ বছরের এই শিল্পী জানান, রক্ষণশীল পাকিস্তানে কখনো তাঁর কোনো ছবিকে নিষিদ্ধ করা হয়নি৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে করাচির এই বাসিন্দা জানিয়েছেন যে, তাঁর বেশিরভাগ কাজই ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর জন্য যথেষ্ট সাহস সঞ্চয় করতে হয়েছে তাঁকে৷ এরপরেও এখনো কোনো হুমকির মুখোমুখি হতে হয়নি মোহাম্মদ আলীকে৷ অথচ তরুণ, উদীয়মান এই চিত্রশিল্পীর শিল্পকর্মে, যা কিনা মূলত মানব শরীরকে কেন্দ্র করে, স্থান পায় লিঙ্গ, রাজনীতি ও যৌনতা৷

তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে, এখনও কোনো বাধার সম্মুখীন না হতে হওয়াতে নিজেই অবাক তিনি৷ কেননা যে দেশে নারীদের পর্দা মেনে চলতে হয়, যেখানে সান্ধ্য আইন আছে, প্রতিনিয়তই যেখানে ঘটে চলেছে সহিংসতার ঘটনা, সেখানে তাঁর শিল্পের বিষয়ে কেউ কথা বলছে না – এটা একরকম বিস্ময়ই জাগিয়েছে তাঁর মনে৷

সম্প্রতি করাচিতে বেশ কিছু আর্ট গ্যালারি হয়েছে, যেখানে নতুন নতুন ছবি কেনা বেচা হয়৷ এটা তরুণ শিল্পীদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে৷ শহরের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ক্যানভাস গ্যালারির মালিক সামিরা রাজা এএফপির প্রতিনিধিকে একটি গ্যালারি পরিদর্শনে নিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে শুধু নগ্নসমকামীদের শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে৷

সামিরার কথায়, এই শিল্পকর্ম দেশের কোনো নিষিদ্ধ সংস্কার বা ট্যাবু নয়, বিশেষত শিল্পমনাদের কাছে৷ তবে এটাও ঠিক, এই ছবিগুলো সাধারণের সামনে প্রদর্শন করা যাবে না৷ কেননা তিনি চান না ঐ শিল্পীর জীবন সংকটে পড়ুন৷

তবে এটা ঠিক যে, রাজার এই ছবিগুলো মূলত পাকিস্তানের ধনী এবং উচ্চবিত্তদের শোয়ার ঘরেই স্থান পায় বা ছোট কোনো বিশেষ পরিসরে প্রদর্শিত হয়৷ করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাদিকা আসিফ বললেন, তারা যখন একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করে, তখন তাদের মাথায় রাখতে হয় সমাজের নীতি বা আদর্শকে যেন তা আঘাত না করে৷ কয়েকজন শিল্পী আশির দশকে জিয়াউল হকের সামরিক শাসন আমলে পাকিস্তানকে কট্টোর ইসলামপন্থি রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দায়ী করেছেন৷ তবে তাঁর বদৌলতে ক্যালিগ্রাফির মতো শিল্পের কদর বেড়েছে বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷

বিখ্যাত পাকিস্তানি শিল্পী মাশকুর রাজা বলেন, ‘‘আমাদের পূর্বসূরিরা প্রচুর নগ্ন ছবি এঁকেছেন৷ কিন্তু এরপর ৮০- র দশকের একটা পর্যায়ে গিয়ে তাঁরা ভয় পেতে শুরু করেন এবং ক্যালিগ্রাফির দিকে মন দেন৷''

আসলে সেসময় অনেক শিল্পীর কপালে খাবারই জুটত না৷ তাই তাঁরা বিভিন্ন পোশাক শিল্পে কাজ জুটিয়েছিলেন৷ অবশ্য ১৯৮৮ সালে জিয়াউল হককে হত্যার পর করাচিতে এই গ্যালারিগুলো চালু হয়৷ আর রাজাসহ অন্য শিল্পীদের ছবি হু হু করে বিক্রি হতে থাকে৷ নব্বইয়ের দশকে বাড়ি-গাড়ি প্রতিপত্তি সবই হয় তাঁদের৷

অপর এক শিল্পী মুনাওয়ার আলীর কথায়, ‘‘মানব শরীর এবং শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আঁকার বিষয়ে আমাদের বিধি-নিষেধ আছে৷ কিছু মুক্তচিন্তাকে কি কেউ কখনও আটকে রাখতে পারে?'' তাই শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি তাঁর ভাবনাকে নতুন ধারায় ছড়িয়ে দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, যখন চতুর্দিক থেকে বিধি-নিষেধ আসে, তখনই চিন্তার দ্বার খুলে যায়, উন্মেষ ঘটে সৃজনশীলতার৷

নগ্নতার মধ্যে তো কোনো খারাপ কিছু নেই৷ সেটাই প্রকৃতিক, প্রকৃতির একেবারে কাছাকাছি যাওয়া৷ তা নগ্নতা নিয়ে শিল্পকর্মে তাহলে বাধা কোথায়? জানান আমাদের, লিখুন নীচে৷

এপিবি/ডিজি (এএফপি, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান