বেঁকে বসেছে বাভেরিয়া
৯ অক্টোবর ২০১৫জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ৫ই সেপ্টেম্বর ঘোষণা দেন যে, মানবিক বিপর্যয় এড়ানোর জন্য জার্মানি তার সীমান্ত খুলে দিচ্ছে৷ এ ঘোষণার পরপরই হাজার হাজার উদ্বাস্তু বুদাপেস্টের রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় করেন৷ সে সময় কারো পক্ষেই বলা কিংবা বোঝা সম্ভব ছিল না যে, এই উদ্বাস্তুর স্রোত থামবে বা কমবে না, বরং বাড়তে পারে৷ বিশেষ করে তথাকথিত বলকান রুট ধরে সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে আগত উদ্বাস্তুরা তাঁদের অভীপ্সিত দেশ জার্মানির দিকে আসতে থাকেন৷ হাঙ্গেরি সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সেই স্রোত আটকানোর প্রচেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়৷ ম্যাসিডোনিয়া আর অস্ট্রিয়াও শেষমেষ উদ্বাস্তুদের বাসে কিংবা ট্রেনে জার্মানি পাঠানো ছাড়া অন্য কোনো পন্থা দেখে না৷
মুশকিল এই যে, জার্মানিতে এত অল্প সময় ও অল্প প্রস্তুতিতে এই পরিমাণ উদ্বাস্তুর থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা করাটা যে সমস্যাকার হবে – এবং কতটা সমস্যাকর হবে – সে সম্পর্কেও কারো স্পষ্ট ধারণা ছিল না৷ ইউরোপীয় পর্যায়ে যেমন এক লক্ষ বিশ হাজার উদ্বাস্তুর ন্যায্য বণ্টনের কোটা স্থির করতেই মাসের পর মাস লেগে গেছে, জার্মানিতে তেমন আগত উদ্বাস্তুদের কোন রাজ্যে – এবং শহরে – পাঠানো হবে, তারও কোনো নির্দিষ্ট ফর্মুলা বা পরিকল্পনা এ যাবৎ নেই৷
ওদিকে অধিকাংশ উদ্বাস্তু জার্মানির যে রাজ্যটিতে প্রথম পদার্পণ করছেন, সেটা হলো দক্ষিণের বাভেরিয়া রাজ্য, খ্রিষ্টীয় সামাজিক সিএসইউ দল যেখানে ক্ষমতাসীন এবং মুখ্যমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার যাদের নেতা৷ সেহোফার বলছেন, পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে দু'লাখ পঁচিশ হাজার উদ্বাস্তু বাভেরিয়ায় পৌঁছেছেন৷ কাজেই সেহোফার ‘বিল্ড' ট্যাবলয়েডের সাক্ষাৎকারে ‘‘অভিবাসন সীমিত করার নির্দিষ্ট আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ''-এর কথা বলেছেন, যার মধ্যে দৃশ্যত পড়বে: উদ্বাস্তুদের একাংশকে অস্ট্রিয়ায় ফেরৎ পাঠানো এবং জার্মানিতে সদ্য আগত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের অবিলম্বে (অন্যান্য রাজ্যে) স্থানান্তরিত করা৷
এ ঘোষণায় অস্ট্রিয়ার প্রতিক্রিয়া অনুধাবনযোগ্য৷ অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইওহানা মিকল-লাইটনার বলেছেন, ‘‘যে সব উদ্বাস্তুরা জার্মানিতে থাকতে চান, তাঁদের যদি অস্ট্রিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে দাঙ্গা বাঁধবে বলে প্রত্যাশা করা যায়৷''
দৃশ্যত তিনি বিষয়টি নিয়ে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ার-এর সঙ্গে লাক্সেমবুর্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সম্মেলনে কথাবার্তা বলেছেন৷
সর্বশেষ খবর: বাভেরিয়ার মন্ত্রীসভার একটি বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইওয়াখিম হ্যার্মান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে, ফেডারাল সরকার রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের আগমন সীমিত করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে বাভেরিয়া সরকার সাংবিধানিক আদালতে যাবার কথা ভাবতে পারেন৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)