২০১৪ সালে ভারতের অর্থনীতি
২ জানুয়ারি ২০১৪ভারতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার একটি বড় কারণ ২০১৪ সালের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন৷ নির্বাচনের পর নতুন স্থিতিশীল সরকার গঠিত হলে, তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে ভারতীয় অর্থনীতির ওপর৷ সর্বশেষ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা সংক্রান্ত রিপোর্টে এ কথা বলেন ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর রঘুরাম রাজন৷ গোটা ২০১৩ সালে ভারতের অর্থনীতি নিম্নমুখী হয়েছে ধারাবাহিকভাবে৷ এ বছরের সাধারণ নির্বাচনের পর, নতুন সরকার আর্থিক ও বিনিয়োগ নীতি রূপায়ণের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে এবং সেইমতো দ্রুত পদক্ষেপ নেবে – এমনটাই বিশ্বাস তাঁর৷ এছাড়া, দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এখনো ভঙ্গুর এবং চলতি পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা নীতি রূপায়ণের জন্য অপেক্ষা করে আছেন, এমনটাই মনে করছেন আরবিআই গভর্নর রাজন৷
কর্পোরেট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০১৪ সালে সাড়ে আট লাখের মতো নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে ভারতে৷ দেশি ও বিদেশের বহু-জাতিক কোম্পানিগুলি সেইভাবেই তৈরি হচ্ছে৷ ভালো কাজের জন্য বেতন বাড়তে পারে অন্তত ২০ শতাংশের মতো৷ একই আশা দেখাচ্ছে বিভিন্ন মানব সম্পদ সংস্থাগুলি৷ তারা মনে করছে, কোম্পানিগুলি তাদের ব্যবসা বাড়াতে বিনিয়োগ বাড়াবে৷ কারণ সরকার নতুন ব্যাংকের জন্য লাইসেন্স দেবে, যেটা হবে কর্মসংস্থানের এক বড় জায়গা৷ তারপর আছে তথ্য-প্রযুক্তি, ওষুধ শিল্প, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, পরিকাঠামো, বিমা ও শিক্ষাক্ষেত্র৷ অনুরূপ মনোভাব ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় শিল্প মহাসঙ্ঘের সভাপতি৷ ভোটের পর তিনি উচ্চ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন৷ তাঁর মতে, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধসীমা বাড়ানো হতে পারে৷ নতুন প্রকল্পকে দেয়া হবে দ্রুত ছাড়পত্র, রাজস্ব ও কারেন্ট অ্যাকাউন্টের ঘাটতি থাকবে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এবং ডিজেলের দাম বাড়িয়ে সরকার ভরতুকির পরিমাণে রাশ টানবে৷
রাজন আশাবাদী হলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এবং মিডিয়া বিশেষজ্ঞরা কিন্তু পোষণ করে ভিন্নমত৷ তাঁদের মতে, আগামী সংসদীয় নির্বাচনে স্থিতিশীল সরকার গঠনের মতো কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কিনা – সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে৷ ১৯৮৯ সাল থেকে এটাই হয়ে আসছে৷ হালের দিল্লি বিধানসভা ভোটে আম আদমি পার্টির মতো এক অজানা নতুন পার্টি যেভাবে ক্ষমতায় এলো, সেটা সকলের হিসেবের বাইরে ছিল৷ মোটকথা, জোড়াতাপ্পি দেয়া সরকারের পক্ষে সমসাময়িক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট আর্থিক নীতি বলবৎ করা সম্ভব হবে কিনা, তা বলা শক্ত৷ কোয়ালিশন বা জোট সরকারে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা হবে ডুমুরের ফুল৷ পরিণামে মার খাবে বিনিয়োগ তথা উন্নয়ন, এমনই মত পোষণ করেন এঁরা৷