1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোবট যখন রক্ষাকর্তা

মার্টিন রিবে/এসবি২৩ অক্টোবর ২০১৫

কলকারখানা, গবেষণাগার, পরিষেবা – অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের কাজ করছে রোবট৷ এবার বিপজ্জনক উদ্ধার অভিযানেও রোবট কাজে লাগানোর লক্ষ্যে অগ্রসর হয়েছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷ উদ্দেশ্য সফল হলে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে৷

https://p.dw.com/p/1GszS
Eurathlon in Berchtesgaden Telob-Roboter schließt Drehventil
ছবি: DW/F. Schmidt

একটি গুদামঘরের ছাদের অংশবিশেষ ভেঙে পড়েছে৷ উদ্ধারকারী দল জীবিত মানুষের খোঁজ করছে৷ দমকল ও অ্যামবুলেন্স কর্মীরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করেই সেখানে কাজ করতে পারেন৷ কারণ যে কোনো সময় নতুন করে বাড়ির অংশ ভেঙে পড়তে পারে৷ উদ্ধারকর্মীরা একটি রোবট পাঠিয়ে আহত মানুষের খোঁজ করছেন৷ রোবট এমন সব জায়গায়ও যেতে পারছে, উত্তাপ, বিকিরণ বা ধ্বংসলীলার কারণে যেখানে উদ্ধারকর্মীদের যাবার উপায় নেই৷

এমন পরিস্থিতি এখনো পর্যন্ত শুধু কল্পনা করা সম্ভব৷ কিন্তু বন বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের এক বিশেষজ্ঞ দল একটি ‘হিউম্যানয়েড' বা মানুষের মতো দেখতে উদ্ধারকারী রোবট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন৷ এই টিম এরই মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতে নিয়েছে৷ আজ তাঁরা ‘নিমব্রো'-র ক্ষমতা পরীক্ষা করতে চান৷

গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য আজ এই রোবট লিফট ব্যবহার করছে৷ টিমের প্রধান টোবিয়াস রোডেহুটকর্স বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের পেছনে আইডিয়া হলো, অনেক বিপর্যয় ও বিপজ্জনক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে উদ্ধারকর্মী পাঠানো যায় না৷ যেমন বাড়ি ধসে পড়া বা গ্যাস লিকের আশঙ্কা থাকলে৷ তখন মানুষের বদলে রোবট পাঠিয়ে পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া সম্ভব৷ রোবট সক্রিয়ভাবে কিছু পদক্ষেপও নিতে পারে৷''

ধসে পড়া গুদামঘরে প্রবেশ করতে রোবট নিজেই পথ খালি করে এগিয়ে যাচ্ছে৷ এখনো সে পুরোপুরি স্বাধীন বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে না, তার সহায়তার প্রয়োজন পড়ে৷ রোবটের শরীরে সাতটি ক্যামেরা, একটি লেজার স্ক্যানার এবং বিভিন্ন জয়েন্ট ও চাকার মধ্যে ৬০টি মোটর রয়েছে৷ রোডেহুটকর্স বলেন, ‘‘আমার পেছনে অপারেটররা রোবট-টি নিয়ন্ত্রণ করছে৷ একজন শুধু গতিবিধি, আরেকজন পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করেন৷ অন্য এক জন রোবটের হাতের নড়াচড়া স্থির করেন৷''

উদ্ধার অভিযানের সময় দেখা গেল, পাইপের মধ্যে ত্রুটির ফলে গ্যাস লিক করছে৷ ফলে বিস্ফোরণের আশঙ্কা তীব্র হয়ে উঠেছে৷ এ ক্ষেত্রেও রোবট পাঠিয়ে সেই পাইপ বন্ধ করা হলো৷ দূরে বসে একজন এই কাজে রোবটের হাত নিয়ন্ত্রণ করছেন৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেবাস্টিয়ান শ্যুলার বলেন, ‘‘আমি রোবটের হাত নিয়ন্ত্রণ করি৷ রোবট যা দেখছে, এই চশমার মাধ্যমে আমিও তা দেখতে পাই৷ চারিপাশের ত্রিমাত্রিক জগত ফুটে ওঠে৷ ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলি মিলিয়ে আমার ওরিয়েন্টেশন স্থির হয়৷ তাছাড়া কন্ট্রোলার দিয়ে আমি রোবটের হাত নাড়াতে পারি, একটি মডেলের সাহায্যে হাত নাড়াতে, মুঠো খোলা বা বন্ধ করতে পারি৷''

গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করার ভাল্ভ নাগালের বাইরে হলেও রোবট দমে যায় না৷ উপযুক্ত যন্ত্র হাতে পেলে রোবট ড্রিল বা কাটার কাজ করে নেয়৷ টিমের প্রধান রোডেহুটকর্স বলেন, ‘‘এই রোবটের বিশেষত্ব হলো, তার শরীরে উপরের অংশ হিউম্যানয়েড – অর্থাৎ মানুষের মতো দুটি হাত রয়েছে৷ স্থিতিশীলতার স্বার্থে ও সহজে চলাফেরার স্বার্থে নীচে দু'টির বদলে চারটি পা রাখা হয়েছে৷''

এই মহড়ার সময় ভবনটি ভেঙে পড়ার ঝুঁকি থাকায় উদ্ধারকর্মীরা রোবট পাঠিয়ে আহতদের খোঁজ করছেন৷ এর জন্য রোবট-কে অনেকগুলি দরজাও খুলতে হচ্ছে৷ এর প্রয়োগ শুরু হলে অনেক আহত মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে৷ তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান মাক্স শোয়ার্ৎস বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমরা এমন এক পরিস্থিতি দেখছি, যেখানে একজন মাটিতে পড়ে রয়েছে৷ ক্যামেরায় তোলা থ্রিডি ছবিতে তা খুব স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে৷ সেই অনুযায়ী উদ্ধারকার্য শুরু করা যেতে পারে৷''

এখনো রোবট স্বাধীনভাবে কাজ শুরু করেনি৷ লক্ষ্য হলো, ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি বুঝে রোবট নিজস্ব বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে৷ ততদিন পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীদের একাই কাজ করতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান