1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাখাইনে পরিস্থিতি উন্নতির দাবি মিয়ানমার ভাইস প্রেসিডেন্টের

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রাখাইন রাজ্য থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশে যাওয়ার বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভ্যান থিও৷ জাতিসংঘে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, মিয়ানমার এই বিষয়টিকে ‘বিশেষ সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করে তদন্ত করছে৷

https://p.dw.com/p/2kRmm
Bangladesch Rohingyas im Flüchtlingslager Cox's Bazar
ছবি: Reuters/M.P. Hossain

মিয়ানমার সরকারের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে থিও বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণ স্পষ্ট নয় এবং ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের' এই পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার কারণ খুঁজে বের করা প্রয়োজন৷ লক্ষণীয় হলো, জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনিও ‘রোহিঙ্গা' শব্দটি ব্যবহার করেননি৷

তাঁর এ ভাষণের মাধ্যমে মিয়ানমার জাতিসংঘকে জোর দিয়ে বোঝাতে চেয়েছে যে, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার পর এখন মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাখাইনে সংকট কমছে৷ 

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর, নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী অং সান সু চি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অংশ না নেয়ায় তাঁর পরিবর্তেই ভাষণ দেন থিও৷ এর আগের দিনই অবশ্য জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অং সান সু চি৷

এএফপির খবরে বলা হয়, সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মিয়ানমার থেকে পালানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে থিও অনেকটা সু চির মতোই মন্তব্য করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই যে, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷'' ৫ সেপ্টেম্বর থেকে রাখাইনে আর কোনো সহিংসতা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি৷

তবে জাতিসংঘ বলছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পোড়ানো ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে৷ এতে গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বালাদেশে প্রবেশ করেছে৷

ভাইস প্রেসিডেন্ট থিও আরও দাবি করেন, সন্ত্রাসী হামলার পরই রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হয়েছে৷ অমুসলিমদের ওপরও এর প্রভাব পড়েছে৷

আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার সরাসরি উল্লেখ না করে থিও সমর্থনের জন্য বাইরের দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘প্রথমেই আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি মানবিক ত্রাণের বিষয়টি৷ আমরা নিশ্চিত করতে চাই, যারা অভাবে রয়েছে, তারাই ত্রাণ পাচ্ছে৷ এ ব্যাপারে কোনো বৈষম্য চাই না৷''

মিয়ানমারে ত্রান বিতরণে বাধা, বাংলাদেশে দুর্ঘটনায় ৯ ত্রাণ কর্মী নিহত

মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে বাধা দিয়েছে একদল বৌদ্ধ বিক্ষোভকারী৷ বুধবার রাখাইনের রাজধানী সিত্তের বন্দরে প্রায় ৫০ টন ত্রাণসামগ্রী নৌকায় বোঝাই করার সময় কয়েকশ' বৌদ্ধ বিক্ষোভকারীরা নৌকা উদ্দেশ্য করে পেট্রল বোমা ছোড়ে৷ পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷ 

এ ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বাংলাদেশে ত্রাণ পরিবহনকারী ট্রাক খাদে পড়ে যাওয়ায় নিহত হন রেডক্রসের ৯ ত্রাণকর্মী৷

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

এদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বুধবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স রোহিঙ্গাদের প্রতি সামরিক অভিযানকে ‘ভয়ানক সহিংসতা' হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কঠোর বক্তব্য এটি৷

তিনি বলেন, ‘‘এই সহিংসতা অঞ্চলটির এই প্রজন্মের মধ্যে ঘৃণা ও বিশৃঙ্খলার বীজ বপন করবে, যা আমাদের সবার শান্তি হুমকিতে ফেলবে৷''

অন্যান্য নেতার মন্তব্য

অন্যান্য বিশ্ব নেতারাও সহিংসতা অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন৷ফরাসি প্রেসিডেন্ট  এমানুয়েল মাক্রোঁ এই সহিংসতাকে ‘গণহত্যা' বলে আখ্যায়িত করেছেন৷  আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটকে ‘অসহনীয় মানবিক বিপর্যয়' হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ 

এএম/এসিবি (এএফপি, বিবিসি)