‘খুনের অপরাধ থেকে নিষ্কৃতি’
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ব়্যাবের আরো রয়েছে খুনের অপরাধ থেকে নিষ্কৃতিও, যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতে, ‘‘অপরাধের অভিযোগ এনে কাউকে হত্যা করতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমুহের সিদ্ধান্তকে বৈধতা দেয়া জাতি ও সমাজের জন্য আত্মহন্তারক হবে৷'' সে সময় ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী মওদুদ আহমেদ, যিনি ব়্যাব গঠন করেছিলেন, এর পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন৷
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি যদিও জেনেভায় হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে আইনবহির্ভূত হত্যা আর নিরাপদ হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্সের' প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন কিন্তু আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কথা বেমালুম অস্বীকার করে বলেছেন, ‘‘দেশে কোনো ক্রসফায়ার নেই৷ এমনটা কখনো হয়নি৷''
আইনবহির্ভূত খুনের দলিলি সাক্ষ্য হাজির করা এই গ্যালারির উদ্দেশ্য নয়৷ এটি বরং আবেগের একটি স্তরকে ছুঁতে চেয়েছে৷ যা কিছু চাক্ষুষ, তার চেয়েও গভীরে যাওয়ার প্রয়াস পেয়েছে৷ সেই সব শীতল পথ হেঁটে হেঁটে বেড়িয়েছে৷ কান্নার শব্দ কানে পেতেছে, চোখের তারায় রাজত্ব গড়া ত্রাসের চিহ্ন দেখতে চেয়েছে৷ যা কিছু চাক্ষুষ, তার চেয়েও গভীরে যাওয়ার প্রয়াস পেয়েছে৷ সেই সব শীতল পথে হেঁটে হেঁটে বেড়িয়েছে৷ কান্নার শব্দে কান পেতেছে, চোখের তারায় রাজত্ব গড়া ত্রাসের চিহ্ন দেখতে চেয়েছে৷ ঠান্ডা শবদেহের কাছে থাকা জ্যান্ত মানুষের পাশে চুপচাপ বসে থাকতে চেয়েছে৷
অথচ ছবিগুলো নেহাৎই মনগড়া গল্প নয়৷ প্রতিটি ছবিই কিন্তু অনুপুঙ্খ গবেষণার ফসল৷ যাচাই করা তথ্য এর বুনিয়াদ৷ ছোট্ট সূত্রের জের ধরে গোটা ঘটনার ইঙ্গিত দেয়ার প্রচেষ্টা৷ চিৎকৃত সত্যের নীরব রূপক৷ গ্যালারিটি তথাকথিত ‘ক্রসফায়ার'-কে ভুক্তভোগীর চোখে দেখতে চেয়েছে৷
তানজিম ইবনে ওয়াহাব, মোমেনা জলিল আর ফারিহা করিমের ২০০৯ থেকে ২০১০ পর্যন্ত বিস্তৃত গবেষণাকে ভিত্তি করে আমরা কল্পনা করার চেষ্টা করেছি ঘটনার শিকার মানুষেরা কী দেখেছিলেন কিংবা মরার আগ মুহূর্তে কী ভেবেছিলেন৷ এখানে যে গুগলের মানচিত্রটা রয়েছে তাতে প্রতিটি ‘কেস স্টাডি' দাগানো আছে: http://www.shahidulnews.com/crossfire
‘ক্রসফায়ার' নামের প্রদর্শনী ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে ২০১০ সালের ২২ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেখানোর কথা ছিল৷ উদ্বোধনীর দিন সরকার প্রদর্শনী বন্ধ করে দিল৷ আর দাঙ্গা পুলিশে ঘিরে রাখল দৃক৷ পুলিশের উপস্থিতেই আলোকচিত্রীকে মৃত্যুর হুমকিও দেয়া হয়েছিল৷ অথচ জনগণের নিরাপত্তা বাহিনী কোনো গা করলো না৷ সরকারকে আদালতে নিয়ে তুলল দৃক৷ সরকারকে পিছু হটতে হলো৷ দর্শকরা একদিনের জন্য প্রদর্শনী দেখতে পেলেন৷ সেসময় দৃক বন্ধ করে দেয়ার কারণে দেশে এবং দেশের বাইরে প্রতিবাদের শোর উঠেছিল, কিন্তু খুন আর গুম আজও বন্ধ হয়নি৷
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের উপায় কী? লিখুন নীচের মন্তব্যের কলামে৷