1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দক্ষতার সঙ্গে বিপজ্জনক বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ

ফাবিয়ান স্মিট/এসি২১ সেপ্টেম্বর ২০১২

আধুনিক সমাজে, সভ্যতায় প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সৃষ্টি হয়৷ কলকারখানা, বাড়িঘর-রাস্তাঘাট তৈরি এবং কৃষিকাজ থেকে কীটনাশক, সলভেন্ট, রং, তেল, অ্যাসিড ইত্যাদি নানা রাসায়নিক এসে জমা হয়৷ এরপর থাকে বিপজ্জনক বর্জ্য সরানোর কাজ৷

https://p.dw.com/p/16CBB
ছবি: picture-alliance/Hinrich Bäsem

বিপজ্জনক বর্জ্যের মধ্যে পুরনো ব্যাটারি কি কন্ডেনসারও পড়ে৷ পড়ে হাসপাতালের বর্জ্য, যা থেকে রোগ সংক্রমণ ঘটতে পারে৷ মরা জন্তু-জানোয়ার, ফেলে দেওয়া ওষুধপত্র, এসবই বর্জ্য, এবং তা ঠিকমতো অপসারণ না হলে পরিবেশ দূষিত করতে পারে এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিপদ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷

বিপজ্জনক পদার্থগুলিকে জৈব এবং অজৈব, এই দুই বিভাগে ভাগ করা চলে৷ খনিজ তেল, কীটনাশক, রাসায়নিক দ্রাবক, বার্নিশ, ল্যাকার, এনামেল ইত্যাদি বস্তুত অর্গ্যানিক রাসায়নিক পদার্থ এবং এগুলোকে বিনাশ করতে আজকাল আর বিশেষ অসুবিধে নেই: ১,১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় দু'সেকেন্ডের বেশি রাখলেই সেগুলো তাদের একক উপাদানে পর্যবসিত হয়৷

জার্মানিতে ‘জন্ডারম্যুল' বা বিশেষ বর্জ্য বিনাশের জন্য যে সব চুল্লি আছে, তার মধ্যে ব্রুন্সব্যুটেলের চুল্লিটিকে আধুনিকতম বলে গণ্য করা হয়৷ সাধারণ চুল্লিগুলিতে বিপজ্জনক বর্জ্য একটি ফার্নেসে ঢুকিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয় – ছাই ফার্নেসের ঝাঁঝরি দিয়ে নীচে গিয়ে পড়ে৷ ব্রুন্সব্যুটেলে বর্জ্য আরো ভালোভাবে পোড়ানোর জন্য একটি সুবিশাল ঘোরানো ফার্নেস ব্যবহার করা হয়৷ ফার্নেসটি আস্তে আস্তে ঘোরে, যা-তে বর্জ্য পদার্থগুলি ভালোভাবে মিশে যেতে পারে এবং বাতাস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পায়৷ পরে আরো একটি ফার্নেসে সেই আধপোড়া বর্জ্য পুরোপুরি পোড়ানো হয়৷

ব্রুন্সব্যুটেলের চুল্লি থেকে যে ধোঁয়া বেরোয়, তা-তে ডিঅক্সিন গোত্রীয় কোনো বিষাক্ত অর্গ্যানিক কমপাউন্ড নেই বললেই চলে৷ পরে সেই ধোঁয়া যখন ঠাণ্ডা হবে, তখনও যা-তে কোনো টক্সিক পদার্থ সৃষ্টি না হয়, সেজন্য ফার্নেসের ধোঁয়াকে প্রথমে এক ধাক্কায় ৭০ কি ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনা হয়, তারপরে ‘ধোয়া' হয়৷ এই ‘ধোয়ার' একটি ফল হলো, বিভিন্ন ধরণের অজৈব রাসায়নিক জলের সঙ্গে মিশে অ্যাসিড হয়ে বেরিয়ে যায়৷ সেই সব অ্যাসিড আবার চুন দিয়ে নিউট্রালাইজ করে, শুকিয়ে পাউডার করা হয়৷ তার পর অ্যাল্কালাইন ওয়াশ দিলে তা হয়ে দাঁড়ায় জিপসাম বা প্লাস্টার অফ প্যারিস৷ অবশ্য এই জিপসামও শেষমেষ মাটির তলায় জমা হয়৷

Mobiltelefon Müll
বিপজ্জনক বর্জ্যের মধ্যে পুরনো ব্যাটারি কি কন্ডেনসারও পড়েছবি: picture-alliance/JOKER

এর পরেও চুল্লির ধোঁয়ায় পারদের রেশ থেকে যায়, যা সরাতে কাঠকয়লার ফিল্টার ব্যবহার করা হয়৷ বাকি থাকে নাইট্রোজেনের অক্সাইডরা, যাদের তাড়াতে একটি ক্যাটালাইজারে অ্যামোনিয়া লাগে৷ অতঃপর চুল্লি থেকে যে ধোঁয়া বেরয়, তা হয় শুধু কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং জলের বাষ্প৷ তার ওপর আবার ব্রুন্সব্যুটেলের চুল্লিটি তিন থেকে চার মেগাওয়াট বিদ্যুতও উৎপন্ন করে থাকে৷

এ ধরণের একটি বিশেষ চুল্লি চালানো খুব সহজ কাজ নয়, বলেছেন ফেডারাল পরিবেশ দপ্তরের মার্কুস গ্লাইস৷ তিনি বললেন, ‘‘বর্জ্য পদার্থ নিরাপদভাবে রাখাটাই একটা সমস্যাকর কাজ: তা নাড়াচাড়া করা কিংবা পরিবহণ করা, সব ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে তা ফার্নেস অবধি পৌঁছনো৷ কাজেই বর্জ্য পদার্থ রাখার গুদাম এবং চুল্লিতে ঢোকানোর আগের পর্যায়ে আমাদের অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয়৷''

যেমন বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ কিংবা হাসপাতালের বর্জ্য ফার্নেসে ঢাললেই চলবে না৷ তা আগে প্লাস্টিকের আধারে করে একটি বিশেষ লিফ্ট দিয়ে ফার্নেসে নিয়ে আসতে হবে৷ কোন আধারে কি আছে, তা বিশ্লেষণ করে দেখার জন্য ব্রুন্সব্যুটেলের চুল্লির একটি নিজস্ব পরীক্ষাগার আছে৷ পরীক্ষাগারের প্রধান হান্স কয়লারৎস জানান, ‘‘যা বর্জ্য আসছে, তা থেকে নমুনা নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে৷ আমাদের ফ্লুরোসেন্ট এক্স-রে মেশিন দশ মিনিটের মধ্যে পিরিওডিক টেবিলের প্রায় সব পদার্থ সনাক্ত করে দিতে পারে৷''

ব্রুন্সব্যুটেলের চুল্লিতে রোজ একটি বর্জ্য দাহের ফর্দ তৈরি করা হয়৷ লক্ষ্য হল চুল্লি থেকে যে ধোঁয়া বেরচ্ছে, তার নির্মলতার ওপর লক্ষ্য রাখা, এছাড়া ফার্নেসের তাপমাত্রা ঠিক রাখা৷ ব্রুন্সব্যুটেলের প্রধান মার্টিন কেমলার দেখালেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ যে গ্যাস নির্গমনের মাত্রা জানতে চান, তা এখানে রেকর্ড করা হচ্ছে৷ এই বারটা সবুজ থাকলে সব ঠিক আছে৷ একটু লাল দেখা দিলেই আমরা জানি: আমাদের সাবধান হতে হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য