ইউরোটানেল টার্মিনালে আবার উদ্বাস্তুর মৃত্যু
২৯ জুলাই ২০১৫নিহতের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে৷ চ্যানেল পারাপারের ফেরি থেকে ট্রাক নামার সময় দৃশ্যত একটি ট্রাকের ধাক্কায় তিনি প্রাণ হারান৷ গত জুন মাসের গোড়া থেকে এভাবে চ্যানেল টানেল টার্মিনাল প্রাঙ্গণে ন’জন মরিয়া উদ্বাস্তু প্রাণ হারিয়েছেন৷
সোমবার রাতে উদ্বাস্তুরা টার্মিনালে ঢোকার হাজার দু’য়েক প্রচেষ্টা চালান, যা কিনা একটা রেকর্ড৷ ক্যালের চারপাশে এখন প্রায় তিন থেকে পাঁচ হাজার উদ্বাস্তু ব্রিটেন যাবার আশায় অপেক্ষারত: এঁদের অধিকাংশ ইথিওপিয়া, ইরিট্রিয়া, সুদান ও আফগানিস্তান থেকে৷ বুধবার সকালেও নাকি তাঁদের মধ্যে ৫০০ থেকে হাজার জন টানেল সাইটের কাছাকাছি ছিলেন৷
উদ্বাস্তুরা গোড়ায় ফেরিগামী ট্রাকগুলোয় ওঠার চেষ্টা করতেন৷ জুনের মাঝামাঝি নিরাপত্তা বৃদ্ধির পর তাঁরা ইউরোটানেলের দিকে নজর দিয়েছেন৷ কিন্তু গত সেমবার যাবৎ ক্যালেতে যা ঘটছে, তা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকেও বলতে বাধ্য করেছে: ‘‘এটা খুবই উদ্বেগজনক৷’’ ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মে আরো ৭০ লাখ পাউন্ড – প্রায় এক কোটি ইউরো – সাহায্য দেবার কথা ঘোষণা করেছেন: এই অর্থে ইউরোটানেলের ফরাসি তরফে নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হবে৷
প্যারিস সরকারও আরো অর্থ বরাদ্দ করছেন৷ ব্রিটেনমুখী লরী ও ট্রাকগুলির জন্য একটি ‘নিরাপত্তা এলাকা’ সৃষ্টি করার কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল৷ এ জন্য ক্যালের কাছে ককেল-এর রেল স্টেশনের কাছে একটি অতিরিক্ত কাঁটাতারের বেড়া তৈরি করা হবে – কেননা উদ্বাস্তুদের প্রচেষ্টা হলো, অপেক্ষারত ট্রাক, কিংবা খোদ টানেল ট্রেনগুলোতে চড়ে বসা৷
জার্মানিতে...
এ দেশে এই বছর প্রায় পাঁচ লাখ উদ্বাস্তু রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করবেন, বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷ বর্তমানেই এই উদ্বাস্তুদের প্রাথমিকভাবে কোথায় রাখা হবে – এবং সে খরচ কে দেবে, রাজ্য না কেন্দ্রীয় সরকার – তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে৷ অনেক ক্ষেত্রেই পৌর প্রশাসন সাময়িকভাবে উদ্বাস্তুদের তাঁবুতে রাখার ব্যবস্থা করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের রোষে পড়ছেন৷ সেই সুযোগে চরম দক্ষিণপন্থিরা পরিস্থিতি আরো বিষাক্ত করছে৷
কাজেই ফেডারাল অভিবাসন কার্যালয়ের প্রধান মানফ্রেড স্মিট বুধবার মন্তব্য করেছেন যে, আলবেনিয়া কিংবা কোসোভোর মতো দেশগুলিকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থনা বা – প্রাপ্তির দৃষ্টিকোণ থেকে ‘নিরাপদ দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে কিনা, তা বিবেচনা করার সময় এসেছে৷ বলকান অঞ্চল থেকে যে সব মানুষ জার্মানিতে এসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন, তাদের প্রায় ৯৯ শতাংশ আবেদন নাকচ হয়, তবুও তারা আসেন প্রধানত রুজি-রোজগারের, সহজতর জীবনের আশায়৷
সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, যে সব উদ্বাস্তু জার্মানিতে বছরের পর বছর বাস করছেন, অনেক সময় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন পর্যন্ত না করে, তাদের অন্তত কাজ করতে দেওয়ার অনুমতি প্রদান সঙ্গত হবে কিনা – পৌর প্রশাসনগুলি পুরোপুরি যার সপক্ষে৷
এসি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ)